দ্বিতীয় দিনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি, বন্ধ ক্লাস-পরীক্ষা
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে সারাদেশের সরকারি কলেজে তিন দিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন চলছে আজ। এতে কলেজগুলোতে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির ফলে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। যারা আসছেন তাদের অনেকে ক্লাস বন্ধ দেখে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষক-কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র সরকারি কলেজ নয়, বরং দেশের সকল সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, সরকারি টিটি কলেজ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, সকল শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, নায়েম, ব্যানবেইসসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা এ কর্মসূচিতে পালন করছেন।
শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির ফলে ক্লাস, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধীন ভর্তি, ফরম পূরণ, সকল ধরনের পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ কর্মশালা, এবং দাপ্তরিক সকল কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে।
রাজধানীর ঢাকা কলেজে বুধবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সকাল আটটা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোন শ্রেণিকক্ষই খোলা হয়নি। বিভাগগুলোতে শিক্ষকদের উপস্থিতি নেই। কর্মচারীরাও আসছেন ঢিমেতালে।
আরও পড়ুন: শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতিতে অচল সব সরকারি কলেজ
তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যারা এসেছেন তাদের অধিকাংশই সম্প্রতি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থী। ক্লাসরুম বন্ধ দেখে তাদের অনেকেই গ্যালারির সামনের করিডোর, প্রশাসনিক ভবন, বিজয় চত্বর, পুকুর পাড় এবং ক্যাফেটেরিয়ায় বিক্ষিপ্তভাবে হাঁটতে দেখা যায়।
রাজধানীর ঢাকা কলেজ ছাড়াও ইডেন কলেজ, তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজসহ সারাদেশের সবগুলো কলেজে একযোগে দ্বিতীয় দিনের এ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
বিসিএস শিক্ষা সমিতি ঢাকা কলেজ ইউনিটের সম্পাদক ড. মো. দিললুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন করতে হবে। এছাড়া সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ, অর্জিত ছুটি প্রদানসহ ঘোষিত দাবিগুলো পূরণ করতে হবে। আগামীকাল ১২ অক্টোবরও এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।
তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার টানা এ কর্মসূচির প্রথম দিন ছিলো। গতকালের মতো আজও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ, সভায় অংশগ্রহণ ও দাপ্তরিক কাজ হতে বিরত থাকবেন।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই বৈষম্য দূর করতে, সেখানে এটিকে আরো উস্কে দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি ক্যাডারের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হলেও শিক্ষা ক্যাডারে এর ভিন্ন চিত্র দেখছি। প্রশাসন যন্ত্রে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে রাষ্ট্রবিরোধী চক্র এই বৈষম্য তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।