১২ জুন ২০২৩, ২০:১৮

‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’ প্রশ্নপত্র শিক্ষাব্যবস্থার রুগ্নদশার প্রতীক

ইউট্যাব  © লোগো

সম্প্রতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) একটি পরীক্ষার প্রশ্নে বাংলা সিনেমার আলোচিত সংলাপ— ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’-এর বিস্তারিত আলোচনা করতে বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ওই প্রশ্নের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমন প্রশ্ন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার রুগ্নদশার প্রতীক মাত্র বলে মনে করছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

আজ সোমবার ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’ শিরোনামে যে প্রশ্ন করা হয়েছে তা খুবই অবিবেচনাপ্রসূত এবং অযৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে এ ধরনের প্রশ্ন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা আশা করেন না। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বিদ্যা চর্চার সর্বোচ্চ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এর মানে এই নয়, যা খুশি তাই করা যাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশি জাতিস্বত্ত্বার সঙ্গে বেমানান এমন কিছু জিনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত। 

বিবৃতিতে ইউট্যাবের নেতৃদ্বয় বলেন, ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’ বা ‘শয়তান দেহ পাবি, চিন্তা পাবি না’ শীর্ষক যে প্রশ্ন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে করা হয়েছে তাতে শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বল চরিত্র প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মনে করি এ ধরনের প্রশ্ন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার রুগ্নদশার প্রতীক মাত্র। আমরা দেখে আসছি বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে সব সেক্টরে এমনভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে যে, সবকিছুতেই সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের নতুন প্রজন্ম খুব ভালো কিছু শিখতে এবং জাতিকে দিতেও পারবে না।

আরও পড়ুন: ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’— ভাইরাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র

তারা আরও বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই প্রশ্নপত্রের ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আসার পর এর পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। নেটিজেনদের পক্ষ থেকে সমালোচনা হচ্ছে বেশি। ওই প্রশ্ন কাণ্ডের কারণে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। হেজিমনি বোঝানোর জন্য সিনেমার ডায়ালগ বেছে নিয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি করা যুক্তিসঙ্গত নয়। শব্দগুলো সাধারণত নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দেয়। অন্য উদাহরণের মাধ্যমেও বিষয়টি স্পষ্ট করা যেত। এ ছাড়াও প্রশ্নপত্রে বাংলা ভাষা ইংরেজি শব্দে উল্লেখ করা কতটা যৌক্তিক, সেটিও বিবেচনার বিষয়। এমন অপ্রীতিকর ভাবধারার প্রশ্ন করা অসমীচীন।