কোন পথে নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি?
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের দলভিত্তিক রাজনীতির ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ৯০ দশক থেকে এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণত আওয়ামীপন্থী, বিএনপি-জামায়াতপন্থী এবং বামপন্থী এই তিন ধরনের মতাদর্শের শিক্ষক রাজনীতি দেখা যেত। তবে গত এক দশকের আগে-পরে প্রতিষ্ঠিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বদলেছে শিক্ষক রাজনীতির এই চিত্র।
২০০১ সালের পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক রাজনীতির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো রাজনৈতিক দল নয়— শিক্ষকরা রাজনীতি করছেন নিজেদের প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়, জেলার পরিচয় কিংবা ক্ষমতাসীন কোনো ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি), হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই ছয় বিশ্ববিদ্যালয়েই বর্তমানে দল কিংবা আদর্শভিত্তিক শিক্ষক রাজনীতির পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়, জেলার পরিচয় কিংবা স্থানীয় ক্ষমতাসীন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে শিক্ষকরা রাজনীতি করছেন।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের বিবেক দিয়ে রাজনীতির কথা বলেছিলেন এবং তাদের রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা হওয়ার অধিকার পর্যন্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষকরা সেই কথা কতটা মানছেন? আমি মনে করি শিক্ষকরা যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নিজেদের বিবেককে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করে তাহলেই শিক্ষক রাজনীতি কাঙ্ক্ষিত রূপে ফিরবে- অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
এদের মধ্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় রাজনৈতিক দলভিত্তিক শিক্ষক রাজনীতি হলেও ২০১২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক এবং এলাকাভিত্তিক শিক্ষক রাজনীতি বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নোবিপ্রবিতে বর্তমানে শিক্ষকদের মোট ৬টি গ্রুপ বিদ্যমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষকদের চারটি গ্রুপ এবং নোয়াখালী অঞ্চল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে পৃথক আরো দুটি গ্রুপ রয়েছে। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সাধারণত নোয়াখালী গ্রুপ এবং ঢাবি গ্রুপ থেকে অধিক সদস্য নির্বাচিত হয়। অপরদিকে প্রশাসনিক পদসমূহ অধিকাংশই ময়মনসিংহ গ্রুপের অধিকারে থাকে।
এ বিষয়ে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিপ্লব মল্লিক বলেন, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাও এখন বিভক্ত এটা ঠিক তবে যদি কখনও সংকটময় পরিস্থিতি আসে জাতীয় স্বার্থে নিশ্চয়ই সবাই আবারও একজোট হবে। আর আমাদের এখানে গ্রুপিংটা মূলত শিক্ষকদের ব্যক্তিগত পছন্দের কারণে। সবাই হয়ত একজনকে নেতা হিসেবে পছন্দ করছে না। কে কাকে নেতা হিসেবে পছন্দ করছে তার উপর কেন্দ্র করেই গ্রুপিং হচ্ছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের তিনটি গ্রুপ রয়েছে। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা অঞ্চল কেন্দ্রিক, একটি গ্রুপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রিক এবং অপর গ্রুপটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা অঞ্চল কেন্দ্রিক।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিত্তিক শিক্ষক রাজনীতির অস্তিত্ব থাকলেও বিগত কয়েকবছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির রাজনীতিও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক এবং এলাকাভিত্তিক হয়ে উঠেছে। আওয়ামী মতাদর্শের শিক্ষকরা নীল দল ও বঙ্গবন্ধু পরিষদে। অপরদিকে বিএনপিপন্থী সাদা দল কাগজে-কলমে থাকলেও রাজনৈতিক সক্রিয়তা নেই বললেই চলে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক রাজনীতি বর্তমানে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয় ও এলাকার পরিচয়ে গড়ে ওঠা শিক্ষকদের তিনটি গ্রুপ দ্বারা। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা অঞ্চল কেন্দ্রিক, একটি গ্রুপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রিক এবং অপর গ্রুপটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা অঞ্চল কেন্দ্রিক। মূলত এই তিনটি গ্রুপই শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়-পরাজয়সহ প্রশাসনিক পদ-পদবী প্রাপ্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শামিমুল ইসলাম বলেন, এলাকাভিত্তিক, বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক গ্রুপের বিষয়টি অস্বীকারের সুযোগ নেই। তবে এখানে মোটা দাগে এখন দুটি গ্রুপই রয়েছে যাদের একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সমিতির রাজনীতি কুক্ষিগত করে রেখেছে এবং নতুন নির্বাচনও আয়োজন করতে দিচ্ছে না। আর এর বাইরে ভিন্ন মতাদর্শের যে কথা বলছেন তারা আসলে সেভাবে কখনোই ছিল না। তাদের সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০-১২ জন হতে পারে। দুঃখজনক হলো আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাই বিভক্ত হয়ে দুটো গ্রুপ তৈরি হয়েছে। এর বাইরে এলাকাভিত্তিক, বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক কিছু গ্রুপও রয়েছে। এক কথায় যদি বলি তাহলে এ বিষয়গুলো কখনোই কাম্য নয়।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, এধরনের গ্রুপিংকে আমি খারাপভাবে দেখছি না। শিক্ষক রাজনীতি মূলধারার রাজনীতির মত নয়। শিক্ষকরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হতেই পারেন।
একই চিত্র জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা দুটো গ্রুপে বিভক্ত এবং বর্তমানে শিক্ষক রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রাখছে শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়। তথ্য অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক তিনটি শিক্ষক গ্রুপ রয়েছে। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে যেই প্যানেল অন্তত দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক গ্রুপের ভোট পায় তারাই জয়লাভ করে।
এ বিষয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, এধরনের গ্রুপিংকে আমি খারাপভাবে দেখছি না। শিক্ষক রাজনীতি মূলধারার রাজনীতির মত নয়। শিক্ষকরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হতেই পারেন।
বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. হাসিবুর রহমান বলেন, আমি এটাকে খুব বড় বিষয় হিসেবে দেখছি না। এটি মূলত মনস্তাত্ত্বিক একটা বিষয়। দেখা যায়, যারা একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে এসেছে তাদের মধ্যে একটা মনস্তাত্ত্বিক মিলের কারণে তারা সংঘবদ্ধ থাকে। এটি খারাপ কিছু নয়। তবে আল্টিমেটলি শিক্ষক রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক এবং এলাকাভিত্তিক শিক্ষক রাজনীতি চর্চা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষকদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক তিনটি এবং গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর ভিত্তিক দুটি গ্রুপ বিদ্যমান। তবে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সাধারণত এই ৫ গ্রুপের শিক্ষকবৃন্দসহ শিক্ষক রাজনীতিতে যুক্ত অপর শিক্ষকরা জোটবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক ঐক্য এবং বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধিকারের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদ নামে মোট ২টি প্যানেল গঠন করেন। যে প্যানেল অন্ত দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক গ্রুপকে জোটবদ্ধ করতে পারে তারাই জয়লাভ করে।
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. হাসিবুর রহমান বলেন, আমি এটাকে খুব বড় বিষয় হিসেবে দেখছি না। এটি মূলত মনস্তাত্ত্বিক একটা বিষয়। দেখা যায়, যারা একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে এসেছে তাদের মধ্যে একটা মনস্তাত্ত্বিক মিলের কারণে তারা সংঘবদ্ধ থাকে। এটি খারাপ কিছু নয়। তবে আল্টিমেটলি শিক্ষক রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। রাজনীতিতে সময় দিতে গিয়ে শিক্ষকদের জন্য একাডেমিক কাজে এবং গবেষণায় সময় দেয়া কঠিন হয়ে যায়, অনেকসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।
আমরাও শিক্ষক রাজনীতি করেছে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক রাজনীতিতে যেভাবে গ্রুপিং হচ্ছে সেটি দুঃখজনক। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষকই নিজেদের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক দাবি করে। আসলেই কি সবাই আওয়ামীপন্থী? খুঁজলে দেখা যাবে এদের মধ্যে অনেক বিএনপিপন্থী-জামায়াতপন্থী শিক্ষক রয়েছে-অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সক্রিয় শিক্ষক রাজনীতি না থাকলেও ইতোপূর্বে দিনাজপুরের দুই সংসদ সদস্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের দুটি গ্রুপ বিদ্যমান ছিল। এছাড়া দিনাজপুর এবং বৃহত্তর রংপুর কেন্দ্রিক দুটি শিক্ষক গ্রুপ ছিল।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষক রাজনীতি বর্তমানে অনেকটাই স্থানীয় রাজনীতি কেন্দ্রিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা বেশ কয়েকবছর ধরেই বিভক্ত থাকলেও বর্তমানে বরিশাল সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্ব আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শিক্ষক রাজনীতির বর্তমান এ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরাও শিক্ষক রাজনীতি করেছে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক রাজনীতিতে যেভাবে গ্রুপিং হচ্ছে সেটি দুঃখজনক। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষকই নিজেদের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক দাবি করে। আসলেই কি সবাই আওয়ামীপন্থী? খুঁজলে দেখা যাবে এদের মধ্যে অনেক বিএনপিপন্থী-জামায়াতপন্থী শিক্ষক রয়েছে। নিজেদের সুবিধার্থে তারা আওয়ামীপন্থী শিক্ষক পরিচয় দিচ্ছে। এছাড়া এই যে এলাকাভিত্তিক, বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক গ্রুপ এগুলোও কিন্তু হচ্ছে শিক্ষকদের ব্যক্তিস্বার্থের কারণেই।
এসময় তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের এই এলাকাভিত্তিক, বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক গ্রুপগুলোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়েও জটিলতার তৈরি হয়। উপাচার্যের পক্ষে সঠিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া শিক্ষকরাও দেখা যায় একাডেমিক গবেষণার তুলনায় রাজনীতিতে মগ্ন হয়ে যান ফলে শিক্ষার্থীরা তথা রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এধরনের পরিস্থিতির সমাধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলায় উপাচার্যকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি সবাইকে সমানভাবে দেখবেন, একাডেমিক কাজে উৎসাহিত করবেন। শিক্ষকদের মধ্যে কেই উপাচার্যের কাছের, কেউ দূরের, কেউ বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, কেউ কম সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে এমন যেন তৈরি না হয়। তাহলে এধরনের গ্রুপিং অনেকাংশে কমে আসবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষকরা কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে এসেছেন বা কোন এলাকা থেকে এসেছেন তার উপর নির্ভর করে কোনো এসোসিয়েশন বা সংগঠন গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু এই পরিচয় যদি শিক্ষক রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে তাহলে সেটি হবে দুঃখজনক।
প্রবীণ এই অধ্যাপক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের বিবেক দিয়ে রাজনীতির কথা বলেছিলেন এবং তাদের রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা হওয়ার অধিকার পর্যন্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষকরা সেই কথা কতটা মানছেন? আমি মনে করি শিক্ষকরা যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নিজেদের বিবেককে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করে তাহলেই শিক্ষক রাজনীতি কাঙ্ক্ষিত রূপে ফিরবে।