কোষাধ্যক্ষকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি

  © টিডিসি ছবি

শিক্ষকদের নিয়ে বির্তকিত মন্তব্যের জেরে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোবারক হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতি। সোমবার (২৯ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন প্রায় শতাধিক শিক্ষক। এসময় কোষাধ্যক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন সমিতির নেতারা।

মানববন্ধনে আইন অনুষদের ডিন ড. মো. রাজিউর রহমান বলেন, আমরা কিছুদিন আগেই একটি মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলাম সেখানে কোষাধ্যক্ষ তার বেতন-বোনাস সংক্রান্ত জটিলতার জন্য ভিসি স্যারের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টসের এক কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দেন। আমরাই ঘটনার স্বাক্ষী। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার কিছুই করতে পারবেন না এমন ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও তার এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তার এই অশ্রাব্য কথায় তিনি অনুতপ্ত নন বরং আমাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তাই আমরা তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম।’

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, প্রায় ২০-২৫ জন শিক্ষক তাদের প্রমোশন ও আপগ্রেডেশন আটকে আছে গত প্রায় ৪ বছর ধরে। তাদের বিভিন্ন ধরনের যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য যে ডিউ ডেট আছে নিয়ম অনুসারে তা দেওয়া যায় কিনা এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছিলো। সেসময় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপক বিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন। যার মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তার সরাসরি ছাত্র।  তার ছাত্রের সামনেই সে বারবার চিৎকার করে উঠছিলেন এবং ভিসি মহোদয়ও তাকে বেশ কয়েকবার থামানোর চেষ্টা করেছেন। এসময় তিনি ঢাকা যাবেন বলে গাড়ি দাবি করেন। প্লানিংয়ের এক কর্মকর্তা তাকে জানান তার গাড়ির উপর নিষেধাজ্ঞা আছে। তখন তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তার গাড়ির সঙ্গে শিক্ষকদের কি সংযোগ আছে? এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষক তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি শান্ত হননি। আমরা তখনও চুপ ছিলাম। আমি তাকে বলেছিলাম ক্ষমাও চাইতে হবে না অন্তত ঐ ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে একটা মেইল করতে। কিন্তু উনি আমার মুখের উপর ফোন কেটে দিয়েছে।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. মো সালেহ আহমেদ বলেন, তিনি যখন এখানে নিয়োগ পেলেন আমরা খুবই আনন্দিত হয়েছি আমাদের অভিভাবক হিসাবে তিনি  আমাদের নতুন পথ দেখাবেন। কিন্তু আমরা ধীরে ধীরে উদঘাটন করেছি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জ বাসীকে  তিনি গণ্য করেন না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: মোবারক হোসেন বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি করাপশন হয়। কিছু শিক্ষক অবৈধভাবে প্রমোশন পেতে চেয়েছিলেন। আমি তার বিরোধিতা করি। কারণ আমি মুক্তিযোদ্ধা, অন্যায় সহ্য করতে পারি না। আর এই বাঁধা দেওয়াতে আমার বিরূদ্ধে এটা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মিথ্যা কথা বলা, অবৈধ কাজ করা আমি পছন্দ করিনা। আমি একজন ট্রেজারার আমার হাত দিয়েই সব টাকা-পয়সা যাচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠিয়েছেন এখানে চুরি-চামারি হয় কিনা দেখার জন্য। কেন আমি রাগ করেছি তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনে নিন।

এর আগে গত ২৪ মে বশেমুরবিপ্রবি ট্রেজারারকে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। সেখানে ২৭ মে পর্যন্ত সময়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এসময়ে ট্রেজারারকে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়ার মানববন্ধন ডেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল শিক্ষক সমিতি।


সর্বশেষ সংবাদ