পিটার হাসের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আচরণে উদ্বিগ্ন জাবি শিক্ষকদের একাংশ
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আওয়ামীপন্থীদের শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’। শুক্রবার (১৬ই ডিসেম্বর) রাতে সংগঠনটির সদস্য সচিব ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, পিটার হাসের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের সচেতন জনগণ হতাশ হয়েছে।
এতে বলা হয়, পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কথা বলছেন যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং স্বাধীন দেশের জনগণের জন্য অসম্মানজনক।
বিবৃতিতে শিক্ষক পরিষদ জানায়, গত বুধবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপির নিখোঁজ সাবেক এক নেতার বাসায় গিয়ে বিশেষ আলোচনা করেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, তিনি মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে আলোচনায় অংশ নিলেও সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সহস্রাধিক গুম হওয়া সরকারি কর্মকর্তার স্বজনদের কথা কর্ণপাত করেননি। এমনকি ওই সকল স্বজনহারা ব্যক্তিদের উদ্যোগে গঠিত ‘মায়ের কান্না’ নামের সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দেওয়া স্মারকলিপিও গ্রহণ করেননি মার্কিন এ রাষ্ট্রদূত। এ সময় পিটার হাসের আচরণ ছিল অদায়িত্বসূলভ, অপেশাদারী এবং অংশত অমানবিক, যা ভিয়েনা কনভেনশনের (১৯৬১) সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির জন্য অসৌজন্যমূলক এবং পক্ষপাতমূলক আচরণের মাধ্যমে তার কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন। যা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দ্বৈত আচরণের বহিঃপ্রকাশ। তিনি মুখে মানবাধিকারের কথা বললেও আদতে তিনি মানবাধিকার হরণের পন্থায় হাঁটছেন।
শিক্ষক পরিষদ বিবৃতিতে দাবি করেন, বাংলাদেশের জনগন কোন রাষ্ট্রদূতের কাছে এহেন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আশা করে না। বাংলাদেশে নিযুক্ত সকল রাষ্ট্রদূতের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে এদেশের জনগন। এদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ ও একপাক্ষিক কর্মকাণ্ড অশোভন, গর্হিত ও শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে বিবেচনা করা হয়।
সরকারের সজাগ দৃষ্টি কামনা করে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সকল রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে অধিকতর দায়িত্বশীল ও নিরপেক্ষ আচরণ কামনা করি। একই সাথে যে সব বিদেশী শক্তি মানবাধিকারের অযুহাতে আমাদের স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে তাদের ব্যাপারে সরকারের সজাগ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।