গবেষণা ভাতা পুনর্বহালসহ ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবি বিএনপিপন্থী ঢাবি শিক্ষকদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৫৬ PM , আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৩৪ PM
গবেষণা ভাতা পুনর্বহালসহ ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা। সাদা দলের পক্ষে সংগঠনটির আহবায়ক অধ্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি আজ মঙ্গলবার উপাচার্য বরাবর দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, তাদের দাবিসমূহ দল-মত নির্বিশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকেরই দাবি। এসব দাবি বাস্তবায়নে উপাচার্যকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের ‘গবেষণা ভাতা’ বাতিলের একটি অনাকাক্ষিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আপনি জানেন যে, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই বিশ্ববিবিদ্যালয় শিক্ষকের এক মাত্র কাজ নয়, বরং বিদ্যমান জ্ঞানের বিকাশ এবং নতুন জ্ঞান সৃজনও তাঁদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আর এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো না কোনো ভাবে গবেষণা কাজের সাথে যুক্ত থাকতে হয়।
“শিক্ষকদের গবেষণা কাজের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ গবেষণা ভাতা চালু করেছিল। শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় এর পরিমাণও বৃদ্ধি করা হয়। যদিও গবেষণা কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের তুলনায় গবেষণা ভাতার পরিমাণ ছিল যৎসামান্যই। তারপরও হাঠাৎ করেই এটি রহিত করা হলো। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাসকারী শিক্ষকদের জন্য যাতায়াত ভাতা রহিত করা হয়েছে।”
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, লেকচারার হিসেবে যোগদানের সময় একজন শিক্ষককে যে সর্বোচ্চ চারটি ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হতো সেটিও হ্রাস করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে যে সেশন বেনিফিট সুবিধা ছিল তাও বাতিল করা হয়েছে। বিদেশে সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত নির্ধারিত অনুদানও এখন বন্ধ রয়েছে বলে আমরা জেনেছি। শতবর্ষ অতিক্রমকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য উচ্চতায় প্রতিস্থাপন এবং এর বৈশ্বিক র্যাংকিং বৃদ্ধির জন্য যখন নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, সে সময় শিক্ষকদের জন্য পেশাগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি না করে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাসমূহ একের পর এক হ্রাস বা রহিত করা অযৌক্তিক এবং অন্যায্য বলে আমরা মনে করি।
“এ ধরণের সিদ্ধান্ত কেবল শিক্ষকদের জন্য আর্থিক ক্ষতিই নয়, অসম্মানজনকও বটে। এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ও স্বায়ত্তশাসনের অবস্থানও ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই আমরা এসব সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের এসব দাবি তুলে ধরা হলো”।
তাদের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১) অন্য কোনো বিকল্প নয়, বরং অবিলম্বে ‘গবেষণা ভাতা’ পুনর্বহাল করা;
২) ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাসকারী শিক্ষকদের যাতায়াত ভাতা পুনর্বহাল করা;
৩) লেকচারার হিসেবে যোগদানের সময় একজন শিক্ষককে যে সর্বোচ্চ চারটি ইনক্রিমেন্ট প্রদানের বিধি চালু ছিল তা পুনর্বহাল করা;
৪) লেকচারার ও সহকারী অধ্যাপকদের জন্য টেলিফোন ভাতা পুনর্বহাল করা;
৫) শিক্ষকদের বিদেশে সেমিনারে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত অনুদান প্রদান অব্যাহত রাখা;
৬) শিক্ষকদের বিদ্যমান কোনো সুযোগ-সুবিধা হ্রাস নয়, বরং ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা;
৭) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বহুল প্রত্যাশিত ‘স্বতন্ত্রবেতন স্কেল’ প্রর্বতনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।