ভিসি-প্রক্টরকে নিয়ে রিজভীর বক্তব্য অত্যন্ত অশালীন ও আপত্তিকর: শিক্ষক সমিতি
ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকে নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী সম্পর্কে যে বক্তব্য রেখেছেন তা অত্যন্ত অশালীন, আপত্তিকর ও নিন্দনীয়।
উপাচার্যের বিভিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন মত-পথ এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক চিন্তা ও দর্শনের চর্চা কেন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরাই বিভিন্ন সংকটে জাতিকে পথনির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু অতীতে কখনো কখনো বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক সরকারের আবির্ভাবের ফলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে, সামরিক স্বৈর-শাসকের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যাম্পাসে অছাত্র সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি ও অস্ত্রের রাজনীতির সূচনা হয়েছিল। তাদের প্রত্যক্ষ মদদে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীকে জীবন দিতে হয়েছিল।
‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে ছাত্ররাজনীতি ছাত্রদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বৈধ ও অবিবাহিত ছাত্রদের হাতে ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার জন্য সাংগঠনিক পদ পেতে ছাত্রদের বয়স নির্ধারণ ও বৈধ ছাত্রত্বের শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারের আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চলমান আছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গত তিন দশকের বন্ধ্যাত্ব কাটিয়ে ২০১৯ সালে সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সক্ষম হয়েছেন। নিজেদের অপকর্মের দায়ভার নিয়ে বিতাড়িত ছাত্র সংগঠনকে ক্যাম্পাসে তাদের রাজনীতি চর্চার সুযোগ করে দিয়েছেন। অথচ বিএনপি নেতা রিজভী উপাচার্য ও প্রক্টরকে অশালীন ভাষায় হুমকি-ধামকি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তিনি (রিজভী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ‘চাকরবাকর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যার মাধ্যমে তার নিজের রুচি ও সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যায়। রুহুল কবির রিভজী যেভাবে হুমকি দিয়ে কথা বলেছেন, তা নিকট অতীতে ক্যাম্পাসে ‘লাশ ফেলে’ রাজনীতির মাঠ গরম করার টেলিফোন সংলাপের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা রহুল কবির রিজভীর এ ধরনের অশালীন বক্তব্য ও হুমকি প্রদানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।