১১ এপ্রিল ২০২২, ১৩:১৪

মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছেন ঝিয়ের মেয়ে, পাশে দাঁড়াল র‍্যাব

আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে র‍্যাব   © সংগৃহীত

সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছেন অন্তরা খাতুন। তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে অন্তরার এ সাফল্যের পিছনের গল্প রয়েছে।

প্রায় ১৫ বছর আগেই অন্তরার বাবা আলাউদ্দিন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অন্তরার তখন দুই বছর। আর আলাউদ্দিনের আরেক সন্তান সোহেল রানা বছর কয়েকের বড়।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাজু বাঘা ইউনিয়নের চন্ডিপুর এলাকায় থাকেন অন্তরা। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বেশ বিপদেই পরেন অন্তরার মা রওশন আরা বেগম। এক সময় নিজেই সংসারের হাল ধরেন। শুরু করেন অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ।  

তবে টাকার অভাবে ছেলে সোহেল রানা পড়াশোনা করতে পারেননি। মায়ের সঙ্গে সংসারের হাল ধরেন সোহেল। রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বোনকে স্কুলে পাঠান। বোন এখন মেডিকেলে ভর্তির অপেক্ষায়।

স্থানীয় চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন অন্তরা। এরপর বাঘা সরকারি শাহদৌলা কলেজে ভর্তি হন অন্তরা। এবারও জিপিএ-৫ পেয়েই উত্তীর্ণ হয় সে।

এদিকে মেয়ে মেডিকেলে সুযোগ পেলেও মেয়ের ভর্তি ও ভবিষ্যৎ পড়াশোনা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন মা রওশনা আরা। তবে অন্তরার পড়াশোনায় পাশে দাঁড়িয়েছে র‌্যাব-৫।

আরও পড়ুন: মেডিকেলে চান্স পেয়েছি, কিন্তু পরিবারের পড়ানোর সচ্ছলতা নেই: জেলেপল্লীর মারুফা

র‌্যাব-৫ এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খান অন্তরার বাড়িতে গিয়ে মেডিকেলে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অন্তরার হাতে তুলে দেন তিনি।

এ বিষয়ে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খান বলেন, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন অন্তরা। আর্থিক অনটনের কারণে তিনি মেডিকেলে ভর্তি হতে পারছিলেন না। তার এ সমস্যার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানতে পারেন আমাদের সিইও। পরে র‌্যাব-৫ এর পক্ষ থেকে অন্তরাকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমাকে তার বাড়িতে পাঠান।

এ ব্যাপারে অন্তরা জানান, আমার পরিবারের পক্ষে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর র‌্যাব-৫ আমাকে ভর্তির টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

অন্তরা জানান, প্রতিবেশী শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়েছি। আবার কখনো মায়ের সঙ্গে হাতের কাজও করেছি। টাকা জমিয়ে পড়ালেখার খরচের পাশাপাশি সংসারেও খরচ, আর্থিক অনটনের মধ্যেও নিজের ইচ্ছাশক্তি আর সবার দোয়ায় এ পর্যায়ে পোঁছাতে পেরেছি।