ফ্রিতে হলেও টিউশন পড়ানো উচিত
ছোটবেলা থেকেই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সাফল্যের সাথেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে বাঁধ সাধে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। কোথাও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে চান্স পাননি।
পড়াশোনা করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে। এরপর পাল্টে যায় স্বপ্নের গতিপথ। বলছি ৪০তম বিসিএস এ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত জারিফ আলিমের কথা।
স্নাতকে থাকাকালীন বন্ধুর প্ররোচনায় একদিন বিসিএস সম্পর্কিত একটি সেমিনারে যান জারিফ। শুরু করেন বিসিএস নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনা। আর সেই স্বপ্নই ৪০তম বিসিএস-এ এসে বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
জারিফের মতে, বিসিএসের পথটা মসৃণ নয়। অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়। কারোর বিসিএস’র প্রতি যদি প্রবল ইচ্ছে থাকে, তবে ১ম বর্ষ থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। বিসিএস একটি ধৈর্যের ফল। পরিশ্রম ও লেগে থাকার প্রবল ইচ্ছাই ব্যক্তিকে ক্যাডারে পরিণত করবে।
ছাত্র অবস্থা থেকে অনেকটা লাইব্রেরি কেন্দ্রিক পড়াশোনা ছিল জারিফের। তারা ৭ থেকে ৮ জনের একটা গ্রুপ ছিলেন। যারা সারাদিন কোনো না কোনো বইয়ের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখতেন। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে কোচিংয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও মডেল টেস্ট সাফল্য পেতে সহযোগিতা করেছে।
জারিফ জানান, যেকোনো প্রকাশনীর একসেট বই ভালোভাবে পড়লে বিসিএস’র পথ এমনিতেই সহজ হয়ে যায়। আর ইংরেজি ও গণিতের টিউশন করাতে পারলে এই পথ আরও বেশি সহজ হয়। প্রয়োজনে কাউকে ফ্রি’তে পড়ানো উচিত। জ্ঞান ধরে রাখতে মাঝেমাঝেই বই রিভাইস করা দরকার। পড়ালেখার পাশাপাশি যতো বেশি বই পড়া যায় ততো ভালো। তবে আমি কখনো বই পড়ার অভ্যাস করতে পারিনি। যে বইগুলো পড়া প্রয়োজন শুধু সেগুলোই পড়েছি।
আরও পড়ুন : স্বামী প্রশাসনে ৭ম, স্ত্রী পুলিশ ক্যাডার
তিনি আরও জানান, বিসিএস পরীক্ষায় প্রিলির রেজাল্ট হবার পর লিখিত প্রস্তুতি নেওয়ার যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় না। তাই প্রিলির পর থেকেই লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কার্যকরী। তবে ভাইবা নিয়ে অযথা টেনশন করার দরকার নেই। নিজের বিষয়, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রথম চয়েজ নিয়ে বিস্তারিত পড়ালেখা করলেই চলবে।
জারিফের সাফল্যে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন তার পরিবার এবং কাছের মানুষজন। ছোটবেলা থেকেই জারিফের আইডল ছিলেন তার শিক্ষক চাচা। তিনিই সবসময় সাহস যুগিয়েছেন।
ক্যাডার হওয়ার পর তাদের মাঝে অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির প্রবণতা থাকলেও জারিফ সেটিকে ব্যক্তিগত সমস্যা বলে চিহ্নিত করতে চান।
তিনি জানান, ব্যক্তির নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উপর নির্ভর করে ব্যক্তি কেমন হবে । ক্যাডার হওয়ার সাথে এগুলোর সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। যে দুর্নীতি করবে সে ব্যবসায়ী হলেও করবে আবার ক্যাডার হলেও করবে।
শিক্ষা ক্যাডারেই থেমে থাকতে চান না জারিফ। এখন স্বপ্ন প্রশাসন ক্যাডার হবেন। তবে সে পথ কি আগের মতোই মসৃণ থাকবে? নাকি প্রতিকূলতা মাড়িয়ে জয় করতে হবে! সে গল্পের জন্য না হয় অপেক্ষা করা যাক।