দারোয়ান থেকে যেভাবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হলেন আলিম
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিম প্রথমে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন দারোয়ান হিসেবে। পরে সেই দারোয়ান পেশা থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে চমকে দেন সবাইকে। কিন্তু এই চমকের গল্পের পেছনে রয়েছে আব্দুল আলিমের দীর্ঘ জীবন সংগ্রামের গল্প। দারোয়ান থেকে বর্তমান অবস্থানে পৌঁছাতে আলিমকে পাড়ি দিতে হয়েছে লম্বা পথ।
ভারতীয় যুবক আব্দুল আলিমকে নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সিকিউরিটি গার্ড থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সংগ্রামের কথা লিঙ্কেডিনে লিখে রীতিমত ভাইরাল হয়েছেন নিজে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাইরেও। নিজের জীবন সংগ্রাম নিয়ে লেখা টুইট বার্তায় আব্দুল আলিম বলেন-
‘‘২০১৩ সালের কথা, মাত্র ১০০০ রুপি (ভারতীয় মুদ্রা) নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। ট্রেনের টিকেট ভাড়া বাবদই খরচ হয়ে যায় ৮০০ রুপি। এরপর ২ মাস রাস্তায় ভবঘুরে হয়ে কাটিয়ে দেয়ার পর অবশেষে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে একটা চাকরি পাই।
একদিন আমার কোম্পানির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জিজ্ঞেস করলেন, ‘আলিম, আমি তোমার চোখে কিছু একটা লক্ষ্য করছি।’ তিনি আমাকে আমার পড়ালেখা এবং কম্পিউটার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করেন। আমি স্কুলে পড়াকালীন এইচটিএমএল সম্পর্কে কিছুটা শিখেছিলাম এটা আমি তাকে জানাই। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে, আমি ঐ বিষয়ে আরও জানতে চাই কি না।.... আর এভাবেই আমার শেখাটা শুরু।
প্রতিদিনই আমার ১২ ঘণ্টা ডিউটি শেষে আমি ঐ সিনিয়র কর্মকর্তার কাছে যেতাম এবং শিখতাম।
আমি ভাবতাম আমাকে কখনো ইন্টারভিউতে ডাকা হবে না। কেননা, আমি কখনো কলেজে যাইনি এবং আমি মাত্র দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। তবে তিনি আমাকে বলেছিলেন, জোহো কর্পোরেশনে তোমার কোন কলেজ ডিগ্রির প্রয়োজন হবে না। এখানে গুরুত্বপূর্ণ তুমি এবং তোমার দক্ষতা। অবশেষে একদিন ইন্টারভিউর দিন এল, আমি ইন্টারভিউ দিলাম এবং উত্তীর্ণ হলাম। জোহা কর্পোরেশনে আজ আমার ৮ বছর পূর্ণ হল।
চাকরির ৮ম বছরের মাইলফলকে এসে দেয়া টুইট বার্তায় আব্দুল আলিম তার সেই সিনিয়র কর্মকর্তা শিবলু অ্যালেক্সিস এর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। একই সাথে তাকে যোগ্যতা প্রমাণ করার সুযোগ দেয়ার জন্য জোহা কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ জানান।