১৩ মার্চ ২০২১, ১০:৪৭

দুবাইয়ে যেভাবে আলো ছড়াচ্ছেন বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী পাভেল

আহমেদ ইখতিয়ার আলম  © সংগৃহীত

দুবাইয়ের ইলেকট্রিসিটি অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (ডিইডব্লিউএ) ট্রান্সমিশন প্ল্যানিং বিভাগের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন আহমেদ ইখতিয়ার আলম। সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সবাই অবশ্য ‘পাভেল’ নামে সবার কাছে পরিচিত। সরকারি কাজের পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং স্থানীয় বাংলাদেশিদের ঐতিহ্য রক্ষায়ও কাজ করছেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী ২০১০ সাল থেকে আছেন দুবাইয়ে। কাজের সেখানে পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। নিজে যেমন আলো ছড়াচ্ছেন, সঙ্গে উজ্জ্বল করছেন বাংলাদেশের নাম।

পাভেল জানান, কেউ যখন ছোটবেলায় জিজ্ঞাসা করত, কী হবা। বলতাম, পাইলট। প্লেন সবার ওপর দিয়ে যায়, কেউ ধরতে পারে না। আবার মানুষের উপকারও হয়, তাই পাইলট হওয়ার ইচ্ছা হতো। কিন্তু ওই সময়ের স্বপ্ন বা ইচ্ছা তো স্থির থাকত না। এরপর স্বপ্ন দেখতাম বড় কিছু অর্জন করব। এমন কিছু করব, যা মানুষের কোনো না কোনো উপকারে আসে। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আমার ছুটে চলা।

যেভাবে আলো ছড়াচ্ছেন পাভেল

দুবাইয়ের ইলেকট্রিসিটি অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি বিশ্বের অন্যতম সেবা সংস্থা। ভোক্তার অধিকার রক্ষায় সংস্থাটি বিশ্বের প্রথম।

পাভেল বলেন, আমি এখানে কিছু মেথডোলজি (পদ্ধতি সংক্রান্ত) নিয়ে কাজ করি। ইঞ্জিনিয়ারিং ভাষায় একে বলে রিলিয়াবিলিটি সেন্টার্ড মেইনটেন্যান্স ম্যানেজমেন্ট। এর অন্যতম কাজ কন্ডিশন মনিটর বেইজড মেইনটেন্যান্স ম্যানেজমেন্ট। এর মাধ্যমে দুবাইয়ের ইলেকট্রিসিটি সিস্টেমে ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে কি না, সমস্যা হলে কতদিনের মধ্যে হবে, সমস্যার গভীরতা কতটুকু হবে, সমস্যাগুলো নিয়ে প্রেডিক্টিভ অ্যানালাইসিস (ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশ্লেষণ) করা হয়।

একটু সহজ উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, আপনার বাসার পাশের ট্রান্সফরমারটি যদি পুড়ে যায় তাহলে লোডশেডিং হবে। অথচ দুবাইতে আমরা আগে থেকেই অ্যানালাইসিস করি, ট্রান্সফরমারটি কোনপর্যায়ে গেলে পুড়ে যেতে পারে। এ কারণে ১৯৯৬ সালের পর থেকে দুবাইয়ে ইলেকট্রিসিটি নিয়ে সমস্যা হয়নি। এটা আমাদের কাজের একটি অংশ। গত দুই বছর ধরে আমার নেতৃত্বে এটি পরিচালিত হচ্ছে।

পাভেল বলেন, আপনি দেখবেন বাংলাদেশে ভোল্টেজ ওঠা-নামা করে। এটি নিয়ন্ত্রণে বাসাবাড়িতে স্ট্যাবিলাইজারসহ বেশকিছু জিনিস ব্যবহার হয়। কিন্তু গ্রিড লেভেলে যদি এই ওঠা-নামা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, কিংবা পাওয়ার কোয়ালিটি বাড়াতে হয় তাহলে বিশেষ কিছু প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। যার একটি হলো স্ট্যাটিক লোড কম্পেনসেটিং। এটি স্পেশাল টেকনোলজি, যেটি পৃথিবীর খুব কম দেশে ব্যবহৃত হয়। জাপান-জার্মানির যৌথ প্রয়াসে দুবাইয়ে এ প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হয়। আমি এই বিশেষ প্রজেক্টের ফ্যাক্টরি ইন্সপেকশন টিমের একজন সদস্য ছিলাম। জাপানের মিতসুবিশি ফ্যাক্টরিতে ইন্সপেকশন করেছি। একজন বাংলাদেশি হিসেবে ওই ইন্সপেকশন টিমে থাকা আমার এবং বাংলাদেশের জন্য গর্বের।

শৈশব ও ইঞ্জিনিয়ারিং জীবন

১৯৮১ সালে কিশোরগঞ্জ সদরে নানা বাড়িতে জন্ম পাভেলের। শৈশব কেটেছে সাভারের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিডিসি) আশপাশে। সেখানে এক স্কুলেই প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা। ১৯৯৮ সালে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে সাভার থানায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হন। স্বপ্নের শুরুটা সেখান থেকে। এরপর ঢাকায় এসে নটর ডেম কলেজ এবং ২০০০ সালে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স (ইইই) বিভাগে ভর্তি হন।

শিক্ষাজীবন নিয়ে পাভেল বলেন, বুয়েটে আমি রেজাল্টের চেয়ে একাডেমিক পড়াশোনা ও দক্ষতা অর্জনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেই। সেখানে একাডেমিক বিষয়গুলোতে আমার রেজাল্ট খুবই ভালো ছিল। তবে অ্যাকাউন্টিংয়ের মতো নন-একাডেমিক বিষয়গুলোতে রেজাল্ট ছিল মোটামুটি। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং নলেজটা ভালো ছিল।

ইউনিভার্সিটি জীবনের শুরু থেকেই উদ্যোক্তা হয়েছিলেন পাভেল। প্রথম বর্ষের শেষভাগে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে একটি সফটওয়্যার ফার্ম গড়ে তোলেন। ওই ফার্মের অধীনে প্রথমবারের মতো এনা পরিবহনের অনলাইন টিকিট কাটার ব্যবস্থা করেন।

পাভেল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজটা অনেক ছোট মনে হলেও ২০০২ সালে বুয়েটের ছাত্রদের হাতে গড়া এ উদ্যোগ আমাদের জন্য বিশাল বড় পাওয়ার ছিল। দেশে ওই সময় সফটওয়্যার ফার্মের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। পরবর্তীতে আমরা সেটা ধরে রাখতে পারিনি। তবে যারা ওই ফার্মে ছিল, তারা সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত। নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে লিড দিচ্ছে তারা। আমরা এখনও খুব ভালো বন্ধু।

কর্মজীবনের শুরু

২০০৪ সালে বুয়েটে পড়া অবস্থায় এনার্জিপ্যাক থেকে পার্টটাইম চাকরির অফার আসে। শুরু হয় কর্মজীবন। ২০০৬ সালে পড়াশোনা শেষে সেখানে ফুলটাইম কাজ শুরু করেন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন এনার্জিপ্যাকে।

পাভেল বলেন, ওই সময় বাংলাদেশে প্রচুর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়। তাদেরও অনেক ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন পড়ে। সে সময় বাংলাদেশে এত ইঞ্জিনিয়ার ছিল না। এ সুযোগে আমি ফুলটাইম চাকরি পেয়ে যাই। কিছুদিনের মধ্যেই আমার কাঁধে চার-পাঁচটা পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্টের ট্রান্সমিশন ডিজাইন ও কমিশনিং-এর দায়িত্ব পড়ে। কাজ দেখানোরও সুযোগ পাই। অল্প বয়সে এত বেশি এক্সপোজার, অনেকে পান না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি ভাগ্যবান।

২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তেল-গ্যাসভিত্তিক একটি কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের অফিসের জন্য একজন রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রতিনিধি) খুঁজছিল। প্রতিষ্ঠানটির হয়ে যে বাংলাদেশে কাজ করবে। ওই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন পাভেল। পরবর্তীতে একটি বিশেষ প্রজেক্টে কাজ করতে পাকিস্তানে যান। দেশে ফেরেন ২০১০ সালে। ওই বছরই চাকরির অফার আসে দুবাই থেকে।

পাভেল বলেন, দুবাইয়ের চাকরির অফারটা আমার কাছে ভালো একটা সুযোগ মনে হলো। আমিও ব্যাগ-ব্যাগেজ সেখানে চলে যাই।

দুবাই আলোকিত করার মিশন শুরু

২০১০ সালে দুবাইয়ের ইলেকট্রিসিটি অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং বিভাগে যোগ দেন পাভেল। ২০১৬ সালে সেখানে একটি কোর ডিপার্টমেন্ট (মূল বিভাগ) তৈরি হয়। অথরিটির প্রায় আড়াই হাজার কর্মী থেকে বাছাই করে ১০ জনকে নিয়ে এটি গঠিত হয়। দুবাইয়ের ট্রান্সমিশন বিভাগে পরবর্তী ১০ বছর কী কী কাজ হবে, তা নির্ধারণ করবেন ওই ১০ জন। তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ও একমাত্র বাংলাদেশি সদস্য পাভেল।

তিনি বলেন, দুবাইয়ে প্রথম যখন চাকরি পাই তখন ভেবেছিলাম দু-তিন বছর কাজ করে অন্য সবার মতো কানাডা অথবা উন্নত দেশগুলোতে চলে যাব। কিন্তু এখানে আসার পর বেশ ভালো লেগে যায়। বিশ্বের যেকোনো দেশে গেলে আপনার স্বকীয়তা কিছুটা বিসর্জন দিতে হয়, একটু হলেও পরিবর্তন হতে হয়, ওই দেশের মতো করে থাকতে হয়। তবে দুবাইতে এমনটি করতে হয়নি। আমি বাঙালি, আমার বাঙালিত্ব বজায় রেখে, বাংলাদেশি হয়েই এখানে কাজ করছি। এটা আমার কাছে চরম ভালোলাগার। এ কারণে এখানেই থেকে যাই।

বিদেশিদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পাভেলের যত উদ্যোগ

দুবাইয়ে বসবাসরত অধিকাংশ বাংলাদেশিই শ্রমিকের কাজ করেন। তাদের প্রতি দুবাইয়ের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিও একটি ভিন্ন। প্রথম প্রথম এটা নিয়ে হতাশ হলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশিদের ঐতিহ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন পাভেল।

তিনি বলেন, প্রথম তিন বছর দুবাই থাকার পর আমার জীবনে ছোট্ট একটি ঘটনা ঘটে। যখন আমার প্রমোশনের সময় হলো, তখন অফিসের কর্তারা ইন্টারভিউতে আমাকে কিছু বাঁকা প্রশ্ন করল। জিজ্ঞাসা করল, বাংলাদেশে কি ভালো কোনো ইউনিভার্সিটি আছে, তুমি কি বিদেশে কোথাও পড়াশোনা করেছ? তাদের এমন বাঁকা প্রশ্নে আমি বিব্রত হলাম, খুবই খারাপ লাগল।

দুবাইয়ের অনেক জায়গা ঘুরেছি। তারা কিন্তু আমাদের দেশের ভালো বিষয়গুলো জানে না। সেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি, তাদের লাইফস্টাইলও একটু ভিন্ন। তারা সব বাংলাদেশিকে একই মানদণ্ডে বিচার করে, খুব খারাপ চোখে দেখে। বিষয়টি আমি বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে শেয়ার করি। তারাও বিষয়টি ফিল করেন। আমার প্রতিষ্ঠানে ‘গ্লোবাল ডে’ নামে একটা অনুষ্ঠান হয় প্রতি বছর। ২০১৩ সালে সেখানে আমরা একটি স্টল দেই। স্টলে আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ওপর নির্মিত একটা শর্ট ফিল্ম দেখাই। আড়ংয়ের কিছু পণ্যও রাখা হয়।

সেখানে আসা আরবি ভাষাভাষীরা ভিডিওটি দেখে খুব মুগ্ধ হন। তারা জিজ্ঞাসা করেন, এখানে ঘুরতে যাওয়ার কোনো ট্যুর কোম্পানি আছে কি না। আরও কত প্রশ্ন বাংলাদেশ নিয়ে। সেই থেকে মাথায় এলো, দেশকে তুলে ধরতে হবে। ব্র্যান্ডিংটা আসলে কঠিন কিছু নয়, ব্যক্তি উদ্যোগ থেকে শুরু করা যেতে পারে।

পাভেল বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে একটা উদ্যোগ নিলাম। বুর্জ খালিফার পাশেই প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের মানুষদের নিয়ে একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়। নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সেখানে তুলে ধরা হয়। আগে ভারত সবচেয়ে বড় র‍্যালি করত। আমরা ফেসবুকে ঘোষণা দিলাম, বাংলাদেশিরাও র‌্যালি করবে। বৈশাখ, বসন্ত আর বরযাত্রা- এই তিন থিমে প্রায় ৫০০ বাংলাদেশিকে নিয়ে অত্যন্ত বর্ণাঢ্য র‍্যালি করলাম। ঠিক আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার ঢঙে। দুবাইয়ের মিডিয়াগুলোতে ফলাও করে বিষয়টি এলো। দেশজুড়ে সাড়া ফেলল। এরপর থেকে আমরা নিজেদের মতো ছোট ছোট গ্রুপ করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সেখানে বিদেশিদের দাওয়াত করা হয়। আস্তে আস্তে বাংলাদেশিদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে থাকে।

দুবাইয়ে প্রথম অনলাইন রেডিও

দুবাইয়ে প্রথম অনলাইন রেডিও চালু করেন পাভেল। ‘রেডিও বৃত্ত’ নামে অ্যাপবেজড ২৪ ঘণ্টা বাংলা রেডিও তখন বেশ সাড়া ফেলেছিল। এক বছর চলার পর বিনিয়োগের অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দুবাইয়ের বাংলাদেশিরা আজও স্মরণ করেন অনন্য সেই উদ্যোগ।

বাংলাদেশি সিনেমা দেখানোর উদ্যোগ

দুবাইয়ে দীর্ঘদিন ধরে বলিউড-তামিলসহ নানা দেশের নানা ভাষী মুভি দেখানো হতো। বাংলাদেশি কোনো সিনেমার স্থান ছিল না। মধ্যপ্রাচ্যে বাঙালিদের বিনোদন দেওয়ার দায়িত্বটাও কাঁধে তুলে নেন পাভেল। বলেন, ‘আমি প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি মুভিগুলো এনে দেখানোর ব্যবস্থা করি। আমার স্ত্রীর নামে ‘মিডিয়া মেজ’ (https://www.facebook.com/MediaMazeGulf) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিয়ে বাংলাদেশের মুভিগুলো এখানকার সিনেপ্লেক্সে প্রচার করি, চলচ্চিত্র উৎসবের মতো আয়োজন করি। এখন পর্যন্ত ঢাকা অ্যাটাক, নবাব, দেবিসহ বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি সিনেমা প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়।

এছাড়া আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দুবাইয়ে বাংলাদেশি সিনেমা শ্যুটিংয়ে সহযোগিতা করা হয়। সম্প্রতি মিশন এক্সট্রিম সিনেমার শুট হয় সেখানে। পাভেল বলেন, দুবাইয়ে শুট হওয়া সিনেমাগুলোতে আমরা শিল্পী দিয়েছি। তারা কোথায় কোথায় শুট করতে পারে, সেগুলো আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশের মুভিগুলো সর্বোচ্চ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায় শুট হয়। অথচ দুবাইয়ের মতো সুন্দর একটি শহরে শুট হয় না, এটি দেখেই এমন উদ্যোগ নেওয়া।

বাংলাদেশিদের জন্য বর্তমানে যা করছেন পাভেল

পাভেল বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা প্রায়ই অবৈধপথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান। এ পথে টাকা পাঠালে অনেক সুবিধা মেলে। আমরা অবৈধপথে পাওয়া সব সুবিধা নিয়ে একটি বৈধ প্লাটফর্ম তৈরির চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন এটা অনেক বড় প্রজেক্ট। দুবাইয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারীকে সঙ্গে নিয়ে কাজটা করা হচ্ছে। বাস্তবায়নের পথে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।

সমুদ্রের ঢেউয়ে আলোকিত হবে বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন ধরে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করছে দুবাই। তারা তেল-গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ১০০ ভাগ রিনিউয়েবল এনার্জিতে (নবায়নযোগ্য শক্তি) মুভ করতে চাচ্ছে। বর্তমানে তারা সমুদ্রের ঢেউ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে।

পাভেল বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে আমরা একমাত্র সোলার নিয়ে কাজ করছি। যদিও এটা ততটা কার্যকর ও সাশ্রয়ী নয়। অথচ আমরা বঙ্গোপসাগরের শক্তিশালী ঢেউকে কাজে লাগাচ্ছি না। সমুদ্র উপকূলে যদি আধা কিলোমিটার জায়গাও পাওয়া যায়, তাহলে গোটা চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব। আমি এগুলো নিয়ে দুবাইয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশ সরকার যদি আগ্রহী হয়, তবে আমরা বাংলাদেশেও এটা ইমপ্লিমেন্ট (বাস্তবায়ন) করতে পারব।

তিনি বলেন, দুবাই সময়ের চেয়ে ১০-১৫ বছর এগিয়ে থাকতে চায়। আমরা আগে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরিতে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ সরকার কখনও যদি মনে করে আমাদের সহযোগিতার প্রয়োজন, আমরা হেল্প (সাহায্য) করব। শুধু আমি নই, আরও অনেক প্রবাসী আছেন যারা বড় বড় জায়গায় কাজ করছেন, তারাও যেকোনো প্রয়োজনে দেশকে সাপোর্ট দিতে প্রস্তুত। (সূত্র: ডাকা পোস্ট ডটকম)