যুক্তরাজ্যের পরীক্ষায় ১০০০-এ ৯০৬ পেলেন বাংলাদেশি ডাক্তার
যুক্তরাজ্যের মেম্বারশিপ অব দ্য রয়েল কলেজস অব ফিজিশিয়ান্স অব দ্য ইউনাইটেড কিংডম (এমআরসিপি) পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশি ডাক্তার জেসি হক। ১ হাজার নম্বরের মধ্যে ৯০৬ পেয়ে বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তিনি। সম্প্রতি এমআরসিপিইউতে প্রকাশিত রেজাল্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশী যিনি এই রয়াল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন (এমআরসিপি) পার্ট-২ তে ১ হাজার নম্বরের মধ্যে ৯শ নম্বরের মাইলফলক অতিক্রম করেছেন। এমআরসিপি পরীক্ষায় এবার পাশ নম্বর ছিল ৪৫৪। যেখানে তিনি ৯০৬ পেয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ডাক্তার জেসি হক জানান, ২০১৯ সালের মে মাসে এমআরসিপি পার্ট-১ পরীক্ষা দেই। সেখানে আমি প্রশ্ন পত্রের কাঠিন্যতা দেখে কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম। এক্সামের ৮ ঘণ্টা মনে হয় মাথার উপর দিয়ে কি যে গেল কিছুই বুঝলাম না। বুঝলাম প্রশ্ন পত্র আর আগের মত নেই। কারণ আমরা প্রশ্ন ব্যাংকে যে রকম পড়েছিলাম, সেরকম কিছুই মিলছে না। সেইবার স্কোর আসল ৭৪৬, যেখানে পাস ছিল ৫৪০।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার সাফল্যের বিষয়টি ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে তার এ সাফল্যে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। রাজীব হোসাইন সরকার নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, তোমরা যারা ডাক্তার হতে চাও কিংবা ডাক্তার হয়ে যাবে, তারা সেদিন বুঝতে পারবে ইনি আসলে কি করে ফেলছেন।
তিনি লিখেছেন, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় দুটো কথা কিংবা র্যাম্পে হেটে কয়েকটা সুন্দর ছবি তুললেই পত্রিকায় পাতায় পাতায় তাদের ছবি পাওয়া যায়। ডাক্তার জেসির ক্ষেত্রে তা হবে না। কারণ ৯০৬ মার্কের দুর্লভ রেজাল্ট বোঝার সক্ষমতা একজন ডাক্তার ছাড়া কারোই নাই।
প্রসঙ্গত, ডা. জেসি ৩৯তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার হিসেবে বর্তমানে শরীয়তপুরে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের K-66 ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র। মেডিকেলে অধ্যয়নের পূর্বে তিনি প্রথমে বুয়েটে (৫৪তম) ভর্তি হন। এক বছর পর ২য় বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের সুযোগ পান এই মেধাবী চিকিৎসক।
ডা. জেসি বলেন, এক বড় ভাই আমাকে বলেছেন- বর্তমানে অনেক কঠিন প্রশ্ন হচ্ছে, কিন্তু তুই চেষ্টা করলে ৮০০ অতিক্রম করা সম্ভব। এরপর আমি পরিশ্রম করা শুরু করলাম। আমি চিন্তা করেছিলাম, হয়ত পরিশ্রম করলে সব চেয়ে বেশি হলে ৮০০ প্লাস পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই কঠিন প্রশ্নের যুগে ৯০০ প্লাস নাম্বার আসবে সেটা কল্পনা করিনি।
তিনি জানান, যারা এমআরসিপি এক্সাম দেন নাই, তাদের মূল্যায়নে ভুল হতে পারে। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে গত ২ বছরের এমআরসিপি এক্সামের প্রশ্নের ধরণ আর আগের মত নেই। প্রচণ্ড পরিমাণে কনফিউসিং প্রশ্ন থাকে এবং প্রশ্নের সঠিক উত্তর বের করার জন্য ক্লু খুবই কম থাকে।