০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৮

পড়ার টেবিলে লিখা ছিল—‘ইনশাআল্লাহ, ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডার হব’

মেহেদী হাসান  © সংগৃহীত

‘ইনশাআল্লাহ, ৪৪ বিসিএস এ আমি প্রশাসন ক্যাডার হব।’ এমন মোটিভেশনাল বাক্য লিখা ছিল পড়ার টেবিলে। এরপর ৪৪ তম বিসিএস এ অ্যাপিয়ার্ড প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে প্রশাসন ক্যাডারে (সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) ১০২তম হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-২০১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন মেহেদী হাসান। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি ৯ম গ্ৰেডের চাকরি এবং ২৬ বছর বয়সেই প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হন‌। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন ২০২৩ সালের ২১ এ ডিসেম্বর থেকে  প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার হিসেবে।

তবে এই যাত্রাটা সহজ ছিল না মেহেদী হাসানের। ২০১৪ সালে মাকহাটি জি.সি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০১৬ সালে মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসেন। এই পথটুকু আসতে পারি দিতে হয়েছে অনেক বাধা।

মেহেদী হাসান তার জীবন সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমি মুন্সীগঞ্জ এর মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের সন্তান। গ্রাম থেকে ধীরে ধীরে আমি সকল বাধা বিপত্তি, লজিং এ থাকা ইত্যাদি এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া। এরপর ৩য় বর্ষ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের স্বপ্ন দেখে ধীরে ধীরে বিসিএস এর জগতে আসা।

তিনি বলেন, চাকরির প্রিপারেশনের শুরু থেকে আমার প্রশাসন ক্যাডার প্রতি আগ্রহ ছিল। আমার পড়াশোনার সম্পূর্ণ ফোকাস আমি প্রশাসন ক্যাডারকে ভিত্তি করে এগিয়েছিলাম। আমার পড়ার টেবিলে লিখা আছে, এখনো সেই ছবিটি আছে লেখা ছিল ‘ইনশাআল্লাহ আমি ৪৪ বিসিএস এ আমি প্রশাসন ক্যাডার হব।’ টেবিলের লিখে রাখতাম সহকারী কমিশনার ভূমি, এ ডি সি, ডি সি, বিভাগীয় কমিশনার, উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব, সিনিয়র সচিব। 

মেহেদী হাসান আরো বলেন, আমাদের মুন্সিগঞ্জ জেলার ডিসি অফিস, ইউএনও অফিসসহ সরকারি অফিসগুলো আমি বারংবার দেখতাম আর ভাবতাম কবে একদিন এরকম একজন অফিসার হবো। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সেই পদযাত্রা সহজ করেছেন। আমার মা আমার জন্য সবসময় দোয়া ও মোটিভেশন দিতেন। অথচ আজকের এই সফলতার খবরটি মা আর শুনে যেতে পারলেন না। তিনি করোনাকালীন লিভার জটিলতায় মারা যান। আলহামদুলিল্লাহ আমার আব্বা একজন কৃষক (আলুচাষী)। সে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পারিবারিক অভাব-অনটন এর কারণে করতে না পারলেও আমার আব্বাকে আমি স্বশিক্ষিত বলে থাকি। আমার পড়াশোনার ব্যাপারে তিনি সবসময় পজিটিভ ছিলেন। নিজে কষ্ট করলেও আমাকে আর কাজে নামতে দেয়নি। একসময় লোজিং এ থেকেও পড়াশোনা করেছি কলেজ সময়ে।