০৭ জুলাই ২০২৫, ১৬:১৪

ফেসবুকে পরিচয়ে খামার নিয়ে আলোচনা, অতঃপর অ্যাগ্রো ফার্ম দিয়ে সাফল্যের পথে দুই তরুণ

জুবাইদ হোসেন জিয়ান ও ইখতিয়ার উদ্দিন  © সংগৃহীত

যেখানে অনেক তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে চাকরির আশায় দিন গোনেন, সেখানে জুবাইদ হোসেন জিয়ান ও ইখতিয়ার উদ্দিন এক ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে শুরু হওয়া বন্ধুত্ব রূপ নেয় এক সফল ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বে। যৌথভাবে গড়ে তোলেন ‘ক্বমারুন অ্যাগ্রো ফার্ম’। 

জিয়ান পড়েন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে অন্যদিকে ইখতিয়ার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে। একজন ব্যবসায়িক চিন্তায় দক্ষ, আরেকজন কৃষিতে অভিজ্ঞ। 

মাত্র ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তারা শুরু করে অ্যাগ্রো ফার্মের যাত্রা। নিজেদের ১০ হাজার টাকা, বাকি টাকা বন্ধুদের থেকে ধার করা। ৭ টি ছাগল দিয়ে শুরু করা তাদের খামারটি আজ রূপ নিয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যাগ্রো-এন্টারপ্রাইজে। বর্তমানে খামারে ১০০টিরও বেশি ছাগল, ১২টি গরু, একটি মাছের পুকুর এবং চাষ হচ্ছে শাকসবজি ও বিভিন্ন মৌসুমি ফসল রয়েছে।

২০২৪ সালের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ‘ক্বমারুন অ্যাগ্রো ফার্ম’ মাত্র এক বছরের মাথায় খুলে ফেলেছে চারটি আঞ্চলিক শাখা। খুলনা, নরসিংদী, পটুয়াখালী ও ময়মনসিংহে তারা শাখা খুলেছে। ঢাকায় রয়েছে প্রধান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। তাদের দলে রয়েছেন ১০ জন উপদেষ্টা, ৯ জন পরিচালক, ৪ জন ম্যানেজার, ৮ জন কর্মচারী এবং ৭ জন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এছাড়াও জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত দুটি সেমিনারের মাধ্যমে তাঁরা কৃষি-উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী তরুণদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।

জিয়ানের জানান, এই ফার্ম আমাদের অষ্টম প্রচেষ্টা। আগের সাতটা উদ্যোগে ব্যর্থ হলেও আমরা হাল ছাড়িনি। অন্যদিকে ইখতিয়ার জানান, ছোটবেলা থেকেই কৃষিতে কিছু করার স্বপ্ন ছিল। অনেকেই হাস্যকর মন্তব্য করলেও আমরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রেখেছি। সেই বিশ্বাসই আজ আমাদের এগিয়ে নিচ্ছে।

তাঁদের স্বপ্ন এই খামার ব্যবস্থাপনাকে কর্পোরেট পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। তাঁরা মনে করেন, কৃষিকাজ মানেই শুধু মাঠে কাদা মাখানো নয়, একজন খামারিও হতে পারেন কর্পোরেট নেতৃত্বের অংশ, প্রযুক্তি সচেতন এবং সম্মানিত একজন নাগরিক। তাঁদের মতে, বাংলাদেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে কৃষিখাতেই।