অনার্স-মাস্টার্সে প্রথম হওয়া আতিক বিসিএসেও সেরা
৪৪তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান। তার বাবা মো. আব্দুল কাদির ছিলেন গুরুদয়াল সরকারি কলেজের হিসাবরক্ষক। শৈশবে বাবার কর্মস্থলে যাওয়া-আসার সময় কলেজের শিক্ষকদের দেখে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।
আতিকের শিক্ষা জীবনের শুরু হয়েছিল আরজত আতরজান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এরপর গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে তিনি ভর্তি হন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনেই বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান যখন জিজ্ঞেস করেছিলেন ভবিষ্যতে কী হতে চান, তখন আতিক নির্দ্বিধায় বলেছিলেন—সরকারি কলেজের শিক্ষক। সেই কথার জবাবে শিক্ষক বলেছিলেন, ভালোভাবে পড়াশোনা করলে তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক হতে পারবা। এই বাক্যই যেন তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
মাভাবিপ্রবি থেকে আতিক বিবিএ ও এমবিএ উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তার এই কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে ইউজিসি মেধাবৃত্তি এবং ২০২৩ সালে ‘ইউনিভার্সিটি অ্যাকাডেমিক জিনিয়াস অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন।
সরকারি চাকরির প্রস্তুতির সময়টাতে লাইব্রেরিই ছিল তার দ্বিতীয় বাড়ি। সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নামাজ ও খাবারের সময় বাদে পুরোটা সময়ই দিতেন প্রস্তুতিতে। এই কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তিনি এখন পর্যন্ত ছয়টি সরকারি চাকরিতে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে উপসহকারী পরিচালক পদে কর্মরত।
নিজের সাফল্যের পেছনে আত্মবিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রমকেই মূল শক্তি হিসেবে দেখেন আতিকুর রহমান। একই সঙ্গে পরিবার, বিশেষ করে বাবা-মা, ছোট খালা খায়রুন্নাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মওদুদ-উল-হকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
বিসিএস প্রত্যাশীদের উদ্দেশে আতিক বলেন, প্রস্তুতির শুরুতেই সিলেবাসটা ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে। কী পড়তে হবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো—কী বাদ দিতে হবে সেটা ঠিক করা। গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত মডেল টেস্ট ও বিগত বছরের প্রশ্ন অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে। আর অবশ্যই নিজের শক্তির জায়গাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।