নিরক্ষর কেশব একাই থামিয়েছেন ১২৯টি বাল্যবিয়ে!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৫১ AM , আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৫২ PM
কেশব রায়। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার একজন সংগঠক। যিনি একাই ঠেকিয়েছেন ১২৯টি বাল্যবিবাহ। বিভিন্ন পথনাটকের মধ্য দিয়ে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সচেতনা গড়ে তোলা যার অন্যতম প্রধান কাজ। জীবিকার তাগিদে ভাঙারির দোকানে কাজ শুরু করা কেশবের সাফল্যের ইতিহাস সম্প্রতি উঠে এসেছে ইউনিসেফ বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে।
বাল্যবিবাহপ্রবণ এলাকায় বসবাস তার। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারেই বাল্যবিয়ে দেখতে হয়েছিল আমাকে। ২০০৭ সালে আমার ছোট্ট ভাগ্নিকে পরিবার থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিয়ে ঠেকাতে না পেরে আত্মহত্যা করে সে। বিষয়টি আমার মনে গভীর দাগ কেটেছিল। প্রিয় ভাগ্নির মৃত্যুর পর থেকে প্রতিজ্ঞা করি, আমার উপজেলায় যেন আর কোনো বাল্যবিয়ে না হয়।’
সেই সময় থেকে আশেপাশের গ্রামগুলোতে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পথনাটক দেখানো শুরু করেন তিনি। যে নাটকগুলো তুলে ধরা হতো বাল্যবিয়ের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার কথা। মেয়েদের কী ধরণের সমস্যায় পড়তে হয় বিয়ের পরে, সেগুলোও দেখান সেই পথনাটকগুলোতে।
কেশব বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত ১২৯টি বাল্যবিয়ে ঠেকিয়েছি আমি। যাদের বিয়ে ঠেকাতে পেরেছি, তাদের মধ্যে অনেকেই এখন উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। কেউ কেউ দক্ষ উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছে।’
তার অনন্য এ কাজের জন্য স্বীকৃতিও পেয়েছেন কেশব। ২০১৩ সালে জাতিসংঘের সম্মানজনক ইয়ুথ কারেজ অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশন’ পুরস্কার পান তিনি।
বাল্যবিবাহ ঠেকাতে কিছু অভিনব উপায় ব্যবহার করেন কেশব। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক গ্রামের মেয়েদের হাতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন নাম্বারসহ আমি একটি লাল কার্ড দেই। যাতে বাল্যবিয়ের কথা উঠলে ওই নাম্বারগুলো ব্যবহার করে প্রশাসনের সাহায্য নিতে পারে মেয়েরা।’