‘বেশি না পড়লেও নিয়মিত পড়েছি’—রাবির ওলি উল্লাহ
৪৩তম বিসিএসে প্রাণিসম্পদ ক্যাডার (ভেটেরিনারি সার্জন) হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী ওলি উল্লাহ। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে পাড়ি জমান ইরানে। ডক্টর অফ মেডিসিন পড়তে যান তিনি কিন্তু ২ সেমিস্টার পড়ে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্মানজনক চাকরির কথা চিন্তা করে বিসিএস দেবার কথা মনস্থির করেন তিনি পেয়েছেন সাফল্যও।
ওলিউল্লাহর গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলায়। তার বাবার নাম মাওলানা আব্দুল বাসেদ এবং মায়ের নাম মাতুয়ারা বেগম। তার বাবা পেশায় একজন শিক্ষক। বাবার কাছেই পড়ালেখার হাতেখড়ি হয় এবং মায়ের দিকনির্দেশনায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পান তিনি।
পরবর্তীতে উচ্চমাধ্যমিক শেষে তিনি একই সাথে রাশিয়ান সরকারের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর এবং ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরানের ডক্টর অফ মেডিসিন (এমডি) এর উপর বৃত্তি পান। মেডিসিন পড়ার জন্য রাশিয়ার বদলে ইরানকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ২ সেমিস্টার পড়ে দেশে চলে আসেন ওলি।
দেশে ফিরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগ বেছে নেন এবং এর অধীনে ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি অর্জন করেন। ৪৩তম বিসিএসে প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে (ভেটেরিনারি সার্জন) প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী যিনি ভেটেরিনারি ফ্যাকাল্টি থেকে বিসিএসে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
ওলিউল্লাহ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি নিয়মিত পড়ালেখার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছি। খুব বেশি না পড়লেও নিয়মিত পড়েছি। সিলেবাস আর বিগত প্রশ্নপত্র দেখে নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করে এবং সে জায়গাগুলোকে শক্তিশালী নিজেকে করেছি এবং প্রতিনিয়ত পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা থেকে বের করবার চেষ্টা করেছি। এই সময়টায় অপ্রত্যাশিত উদ্বেগ আসবে, এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে এবং নিজের প্রতি নিজেকে ফাঁকি না দেবার অঙ্গীকার করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ সেক্টর একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত, যা বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে সাহায্য করবে। দেশের জনগণকে নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করতে যারা নিরলসভাবে কাজ করছে তাদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চাই।
ওলিউল্লাহ বলেন, সব চাকরি ভালো ও সম্মানের যদি দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করা যায়। সব ধরনের চাকরির পরীক্ষা দেওয়া উচিত এবং সব পরীক্ষাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন।
বিসিএস সফলতায় অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কঠিন আর অমসৃণ পথ যারা পাড়ি দিয়েছেন তারাই জানেন এখানে পরিশ্রমের পাশাপাশি ভাগ্য কতটা প্রয়োজন। মহান আল্লাহর রহমত না থাকলে কিছুই সম্ভব না, তিনি চেয়েছেন বলেই সম্ভব হয়েছে। কৃতজ্ঞতা আমার মা-বাবার প্রতি। উনাদের দোয়া ছাড়া কখনোই এখানে পৌঁছানো সম্ভব হত না।