৩১ জুলাই ২০২৩, ১১:২৩

সফল হতে অনুসরণ নয়, তৈরি করতে হবে নিজস্ব স্টাইল

মাসুম  © সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত এক মুখ “মাসুম”। ইউটিউব-ফেসবুকে এই চ্যানেলের একটিও ভিডিও দেখেননি দেশে এমন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কোন ইউটিউবারের আলাপন ফলো না করে নিজস্ব একটা স্টাইল তৈরি করতে পারলে অনেক ভালো হয়। সেই সাথে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে বলে সাক্ষাৎকারে কথা গুলো জানান মাসুম। এবং ধৈর্য ধরে পর্যায়ক্রমিকভাবে এগিয়ে যেতে হবে।

এই কাজে যারা শখের বসে আসে তারাই সাফল্য লাভ করে অর্থাৎ ধৈর্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করাটাই মুল বিষয়। কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই সৎ থাকতে হবে বলেও জানান মাসুম।

মাসুমের বাচনভঙ্গি ও কথা বলার মুগ্ধতা ছড়ায় শ্রোতাদের মধ্যে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। আর সে যদি হয় সিনেমা প্রেমী তাহলে তো কথাই নেই। ভিডিওর শুরুতেই জনপ্রিয় সংলাপ "হাই কি অবস্থা সবার"। যা আকৃষ্ট করে বহুগুণে। 'মাসুম' মূলত একটি ইউটিউব চ্যানেল, একই নামে রয়েছে ফেসবুক পেজও। এই চ্যানেল থেকে বিভিন্ন সিনেমার পর্যালোচনা ভিডিও বানানো হয়। যা সিনেমা প্রিয় দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। 

ইউটিউবার মাসুমের ভিডিওগুলোতে প্রচুর পরিমাণ তথ্য-উপাত্ত, বিশ্লেষণ থাকে- যা সিনেমা প্রেমীদের মূল আগ্রহের জায়গা। আর এই ভিডিওগুলোর নির্মাতা মাসুম নিজেই। বর্তমান সময়ে দেশের যে কয়েকজন ইউটিউবার বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন মাসুম তাদের মধ্যে অন্যতম। তার কাছে যেন রয়েছে সিনেমার সব খবর, তাই অনেকের কাছেই মাসুম “সিনেমাওয়ালা” বা "সিনেমারাজ" হিসেবেও পরিচিত।

তবে মাসুম সব সময় একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে নিজেকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বর্তমান সময়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে সফল তিনি। সম্পূর্ণ অতর্কিতভাবে অর্থাৎ কোন পরিকল্পনা ছাড়াই এই জগতে আসেন তিনি। এবং বর্তমানে তিনি শখ থেকে সাফল্যের দুয়ারে। তবে মাসুম জানান তার শুরুটা মোটেও সহজ ছিলো না। মাসুমের পুরো নাম মারুফ আহমেদ মাসুম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। 

ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করাসহ করে থাকেন বই বিশ্লেষণ অর্থাৎ বুক রিভিউ। আলোচিত বা সমালোচিত নন্দিত বইগুলো নিয়ে বেশি কাজ করতে দেখা যায় তার। মাঝেমধ্যে সমসাময়িক আলোচিত বিষয়ে নিজের মতামতকে ব্যক্ত করেন নিজের তৈরি ভিডিওতে। তরুণ এই কন্টেন্ট রাইটার পেয়েছেন লাখো মানুষের ভালোবাসা।

বর্তমানে ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৫ লাখ ২০ হাজার। এবং ফেসবুকে ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউব চ্যানেলের নাম উনার নিজের নামেই "মাসুম" যা সকলের কাছেই পরিচিত। মাসুমের শখ বই পড়া এবং সিনেমা দেখা। শখ থেকে পড়া বই অথবা দেখা মুভির রিভিউ করেই পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা।

তিনি জানান, ২০১৯ সালের ১ মার্চ বুক রিভিউ দেয়ার মাধ্যমে তার কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের যাত্রা শুরু হয়। তবে ২০১৭ সাল থেকেই রসায়ন বিষয়ক বিভিন্ন টিউটোরিয়াল আপলোড দিতেন ইউটিউবে। তবে এই কাজটা মাসুম শখের বসেই করেন। আইন বিষয়ে ভবিষ্যৎ গড়ার ইচ্ছে তার। 

শুরু থেকেই মাসুমের ছাত্র জীবন ছিলো বেশ বনাঢ্য ৫ম এবং ৮ম শ্রেণীতে পেয়েছিলেন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। এবং এসএসসি ও এইচএসসি দুটোতেই পেয়েছিলেন জিপিএ ৫। ব্যক্তিজীবনে মাসুম গতানুগতিক ধারার ইউটিউবারদের থেকে একটু আলাদা। সহজ ও স্বাভাবিক-জীবনে অভ্যস্ত তিনি। মাসুমের ভিডিওতে তথ্য আর বিশ্লেষণের প্রাচুর্য থাকে অনেক বেশি। একেকটি কন্টেন্টের জন্য অনেক অধ্যাবসায় করতে হয় তাকে।

ইউটিউবার বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য অধ্যাবসায় কতটা জরুরি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নিজে ঠিকঠাক জেনে তা অন্যকে জানানোটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই জানতে সময় দিতে হবে, এরপর দর্শকদের জানাতে হবে।” মাসুমের কনটেন্ট গুলোর মুল বিশেষত্ব হলো ভালোকে ভালো আর খারাপকে খারাপ বলা। অর্থ্যাৎ সিনেমা বা গল্পের মুল নির্জাসটুকু অকপটে প্রকাশ করা।