১৪ মার্চ ২০২৩, ১১:৪৯

অর্থাভাবে নিয়মিত কলেজে যেতে পারেনি মেডিকেলে চান্স পাওয়া এমরান

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাওয়া এমরান  © সংগৃহীত

স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়েসহ ছয়জনের সংসার ভ্যানচালক মো. ইউছুফের। সামান্য আয় হলেও সন্তানদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে পিছু হটেননি বাবা। সবাই পড়াশোনা করছে। এরমধ্যে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এমরান হোসেন। তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। অথচ টাকার অভাবে কোচিংও করতে পারেননি। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন বাড়িতে বসেই।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামের এমরান। পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়ে হাজিরহাট সরকারি মিল্লাত একাডেমিতে ভর্তি হন। জেএসসি ও এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি হন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে। এমরান বলেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে দরিদ্রতা কাউকে দমিয়ে রাখতে পারে না– সেটা প্রমাণ করতে চাই।  

তবে বাড়ি থেকে এ কলেজে যাতায়াতে প্রায় ১০০ টাকা খরচকরা সম্ভব ছিল না। তাই নিয়মিত কলেজে যেতেন না। সুযোগ হয়নি প্রাইভেট পড়ার। তবুও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পান। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্যই প্রথম রাজধানী ঢাকায় আসা তাঁর। গত ৮ মার্চ ঢাকায় আত্মীয়ের কাছে ওঠেন। রোববার ঘোষিত ফলে তিনি হয়েছে ৪৭৯তম।

এমরানের বাবা হাজিরহাট বাজারের বিস্কুট ফ্যাক্টরির ভ্যান চালান। মো. ইউছুফ বলেন, ঘরে খাবার না থাকায় এমরান অনেক সময় না খেয়েই ক্লাস করেছে। সে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আনন্দিত তারা। তবে ভর্তি ও পরবর্তী খরচ এখন বড় ভাবনার বিষয়।

এমরানের স্কুলের সব খরচ মওকুফ করা হয়েছিল বলে জানান হাজিরহাট সরকারি মিল্লাত একাডেমির প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ আলম বলেন, কলেজের পাঁচজন শিক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের একজন এমরান। সে খুবই মেধাবী। সে ক্লাসে না থাকলেও পরীক্ষায় ভালো ফল করত।