৫ অক্টোবর থেকে ব্রিটিশ স্টুডেন্ট ভিসায় পরিবর্তন
যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ের জন্য স্টুডেন্ট ভিসার বিধিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে দেশেটির সরকারের হোম অফিস। অন্য ভিসা ক্যাটাগরি থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসার সুযোগ রেখে নতুন বিধিতে বলা হয়েছে, এক বছর যাবত অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের মেইনটেন্যান্স ফান্ড দেখাতে হবে না। একই সাথে স্টুডেন্ট ভিসার ৮ বছরের সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়া হচ্ছে পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য।
এছাড়াও পোস্ট স্টাডি শেষে চাকরির প্রস্তাব পেলে সেখানে যোগ দিতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। ইংলিশ টেস্টের বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট কলেজের ওপর ছেড়ে দিয়েছে হোম অফিস।
ইউরোপীয় এবং ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের একই নিয়মে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার বিধি ঘোষণা দিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর হোম অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আগামী ৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে নতুন নিয়ম। নতুন নিয়মে অন্য ভিসা ক্যাটাগরির বিদেশিরা স্টুডেন্ট ভিসায় আসার সুযোগ পাবেন। আগামী ৫ অক্টোবর থেকে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মেইনটেন্যান্স ফান্ড দেখাতে হবে না।
ব্রিটেনের বাইরে থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে ইচ্ছুকদের ক্ষেত্রে বেশ নমনীয় হোম অফিস। এদিকে স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে বহু-সমালোচিত ৮ বছরের ভিসার ক্যাপ তুলে দেয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি সময় ব্রিটেনে অধ্যয়ন করতে পারবে। একই সাথে লেখাপড়া শেষে কাজের প্রস্তাব পেলে ব্রিটেনে থাকারও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে ব্রিটেনের বাইরে থেকে আসতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ইংলিশ টেস্টের ক্ষেত্রেও নমনীয়তা দেখানোর সুযোগ দিয়েছে হোম অফিস।
এর আগের ভিসার ক্ষেত্রে নিয়ম ছিল পড়া শেষ হওয়ার চার মাসের মধ্য ব্রিটেন ছেড়ে চলে যেতে হবে। ২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) শিক্ষার্থীদের ব্রিটিশ ভিসার ক্ষেত্রে এমন নিয়ম করেছিলেন। এর আট বছর পর ভিসার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ সুযোগকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পেশা বেছে নেওয়ার জন্য ‘সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খোলা’ বলে মন্তব্য করেন। তবে অভিবাসী নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভিসানীতি দেশকে উল্টো পথে নেবে।
ইউনিভার্সিটি অব ইউকের প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টার জারভিজ এ নতুন ভিসার নিয়মকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত ব্রিটেনের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। যুক্তরাজ্যই ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান গন্তব্যস্থল’ এটাও আবার প্রতিষ্ঠিত হবে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা ব্রিটেনের অর্থনীতিকে ফুলেফেঁপে উঠতে সহায়তা যে করেছে, এর অনেক প্রমাণ কাগজে–কলমেই আছে। আর এর পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন পাউন্ড।
ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এর মধ্যে দুই–তৃতীয়াংশই ইইউর বাইরে থেকে আসা। এর মধ্যে ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮৫ হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করবেন এ বছরই। এসব শিক্ষার্থী নতুন ভিসার আবেদন বা কাজের আবেদনের জন্য চার মাস সময় পাবেন। অথবা তাঁরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন।