আইইএলটিএস স্কোর ৫.৫ থাকলে হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা

ইউনিভার্সিটি অব সেগেডে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা
ইউনিভার্সিটি অব সেগেডে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম দেশ হাঙ্গেরি। রাজধানী বুদাপেস্টসহ অন্য বড় শহরের মধ্যে রয়েছে  দেব্রেসেন আর মিসকালো। শুধুমাত্র হাঙ্গেরি নয় ইউরোপের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামাজিক ও যোগাযোগব্যবস্থার কেন্দ্রস্থল বুদাপেস্ট। এছাড়া এ দেশের অধিকাংশ জনবসতি বিখ্যাত দানিউব নদীর কূল ঘেষে গড়ে ওঠেছে।

হাঙ্গেরি সেনজেন ভুক্তদেশ হওয়ায় ইউরোপের ২৫টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া হাঙ্গেরির শতকরা ৯৯ শতাংশ মানুষ ইংরেজি ভাষা জানে এবং এই ভাষায় কথা বলতে পারে। সুতরাং খুব সহজেই ইংরেজি ভাষা দিয়ে যোগাযোগ করা যায়।

দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান অনেক উন্নত এবং ডিগ্রি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের ডিগ্রিরর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এ কারণে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য হাঙ্গেরিকে বেছে নিচ্ছেন। হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষার জন্য সাধারণত বছরে ২ বার আবেদন করা যায়।

হাঙ্গেরির উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলো- ইউটভাস লরান্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেব্রেসেন, সেমেলউইস ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সেগেড, বুদাপেস্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইকোনমিকস, ইউনিভার্সিটি অব পেকস ও সেন্ট ইসভান ইউনিভার্সিটি প্রভৃতি।

যেসব বিষয় পড়ানো হয়: মেডিসিন, ফার্মেসি, দন্ত চিকিৎসা (ডেন্টিস্ট্রি), অর্থনীতি, প্রকৃতি বিজ্ঞান, শিল্প এবং সংগীত বিদ্যা, ব্যবসায় প্রশাসন, সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক, পরিবেশ বিজ্ঞান, খাদ্য বিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে পারেন।

উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা: হাঙ্গেরির ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতা পুরো পৃথিবীব্যাপী। এখানকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। হাঙ্গেরির ব্যাচেলর ডিগ্রি, মাস্টার ডিগ্রি, ডক্টরেট ডিগ্রি ছাড়াও বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদি কোর্সের উপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।

এছাড়া ব্যাচেলর ডিগ্রির মেয়াদ সাধারণত তিন থেকে চার বছর, মাস্টার ডিগ্রির মেয়াদ এক থেকে দুই বছর এবং ডক্টরাল/ পিএইচডি ডিগ্রির মেয়াদ তিন থেকে পাঁচ বছর হয়ে থাকে। অধিকাংশ ব্যাচেলর কোর্স হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় পড়ানো হলেও, অনেক ইংরেজি কোর্সও রয়েছে। তবে ব্যাচেলর কোর্সের তুলনায় মাস্টার্স ও ডক্টোরাল পর্যায়ে ইংরেজি কোর্সের সংখ্যা বেশি।

শিক্ষাবৃত্তি: হাঙ্গেরিয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি বছর নানা ধরণের শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ দিয়ে থাকে। হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আইইএলটিএস স্কোর ৫.৫ বা তার বেশি থাকতে হয়। এটা নির্ভর করে ইউনিভার্সিটি ও কোর্সের উপর। ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।

অবসরে কাজের সুযোগ: হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার পাশাপাশি খন্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে। একজন শিক্ষার্থী প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন। তবে কাজের ক্ষেত্রে যারা হাঙ্গেরিয়ান ভাষা জানেন তাদের বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাইলে হাঙ্গেরিয়ান ভাষা শিখে নেয়া উচিৎ।

আবাসনের সুবিধা: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাইলে, আপনাকে আবাসন নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাতে হবে না। কারণ অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই আবাসন সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য হোস্টেল আছে। তবে আপনি যদি হোস্টেলে থাকতে না চান বা সিট না পান তাহলে অন্য কোনো হোস্টেল বেছে নিতে পারেন অথবা আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন। তবে বাসা ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে ভাড়া চুক্তি সই করার সময় আপনাকে অগ্রিম দুই তিন মাসের ভাড়া নগদ পরিশোধ করে হবে।

খরচ কম: হাঙ্গেরিতে টিউশন ফি ও থাকা খাওয়ার খরচ ইউরোপের অন্যসব দেশের তুলনায় অনেক  কম। বুদাপেস্টের মতো বড় শহরগুলোতে টিউশন ফি ও থাকা খাওয়ার খরচ একটু বেশি তবে অন্যান্য শহরগুলোতে খরচ কম।

জীবনযাত্রার মানের দিক থেকে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের সবচেয়ে বাসযোগ্য শহর হিসেবে বিবেচিত হয়। ফোর্বস ম্যাগাজিন বুদাপেস্টকে বসবাসের জন্য ইউরোপের ৭ম উপযুক্ত শহর হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে।

 

 


সর্বশেষ সংবাদ