ছাত্র অধিকারের নেতাদের পিটিয়ে ক্ষমা চাইলো ছাত্রলীগ
সম্প্রতি ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। আজ সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ডুজা) কার্যালয়ে এসে ক্ষমা চান তারা।
এ সময় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাড়াও ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং মানবাধিকার বিষয়ক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার’ (স্যাট) এর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মিফতাহুল মারুফকে জঙ্গি অভিযোগে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে পরের দিন শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে থানা থেকে বের করে নিয়ে আসার সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির সামনের ফুটপাতে অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগের ছয় কর্মী।
আরও পড়ুন: মেডিকেলে বসেই চবি ভর্তি পরীক্ষা দিলেন এক ভর্তিচ্ছু
এই হামলার ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহউদ্দিন সিফাত, অর্থ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল তুষার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের হেদায়েত উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইত্তেজা হোসেন রাকিব, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মাসুরুর রুদ্র, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সুমন আলী, এফ রহমান হল ছাত্রলীগ কর্মী রোকনুজ্জামান রোকন। সংবাদ সম্মেলনে এরা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ কর্মীদের পক্ষে কথা বলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইত্তেজা হোসেন রাকিব। তিনি বলেন, আমাদের এক বন্ধুকে মারধর করা হচ্ছে এমন মিস ইনফরমেশন পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তাদের আঘাত করে বসি। আমরা ইচ্ছেকৃতভাবে এমনটা করিনি। এর দায় সম্পুর্ণ আমাদের, ছাত্রলীগের নয়। ছাত্রলীগ থেকে আমাদের আদেশ করা হয়নি, আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে এসেছি।
স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (স্যাট) এর প্রতিনিধি আনাস ইবনে মুনির বলেন, আমাদের হেড অব ডিরেক্টরস সালেহ উদ্দিন সিফাত ও ডকুমেন্টেশন ডিরেক্টর আহনাফ সাঈদ খানের ওপর তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুইজনই ঢাকা মেডিকেল চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় আমরা মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযুক্তরা তাদের দোষ স্বীকার করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন কিছু না করার কথা দেওয়ায় আমরা মামলা করা থেকে বিরত থাকছি।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, এটি একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং ক্ষমা চেয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে তারা তো নয় বরং কোনো ছাত্রলীগ কর্মী ক্যাম্পাসের কোনো শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন করবে না। আমরা চাই ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থী সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করুক এবং সহ-অবস্থান নিশ্চিত হোক।