পুলিশকে ধন্যবাদ: বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বরগুনায় ছাত্রলীগের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ। সোমবার (১৫ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ছাত্রলীগ।
এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরানসহ তাদের সমর্থকরা। সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির বলেন, আমরা শোক র্যালি নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করার সময় দুষ্কৃতকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে পেছন থেকে ইট-পাটকেল ছুড়ে।
তিনি বলেন, এতে পুলিশের গাড়িসহ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর হয়। আমরা আমাদের নির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করি। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পাই, পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে খবর প্রচার করা হচ্ছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শোক দিবসের আলোচন সভায় কোনো ছাত্রলীগ সদস্যকে পুলিশ লাঠিচার্জ করেনি। যাদেরকে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে তারা ছাত্রলীগের শোক মিছিলে ইট পাটকেল মেরেছে।
এর আগে, এদিন দুপুর ১২টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: শোক দিবসে এমপির সামনেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
এতে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমি ভবনে আটকিয়ে গণহারে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পিটিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিয়ে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীর বাদানুবাদের ঘটনা ঘটে। বাদানুবাদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। এমপির সামনে এক পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানান নেটিজেনরা।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে শোক দিবসের আলোচনা সভা শেষ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। শিল্পকলার গেট থেকে এমপিসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বের হতে পারলেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গেটের ভেতর আটকে রাখে পুলিশ। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছেড়ে দিতে বলেন এমপি শম্ভু। এ সময় তার (এমপি) সামনে এসে দাঁড়ান বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীসহ পুলিশ সদস্যরা।
তিনি এমপিকে উদ্দেশ্যে করে হাত উঁচিয়ে বলেন, ‘ওপর থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট মারল কেন? ওই খান থেকে কেন ইট মারবে? আমরা কি অন্যায় করেছি, সেটার জবাব দিয়ে যাবে এখান থেকে’। এ সময় এমপি বলেন, এ ঘটনা তো নাও ঘটতে পারত। তখন মহরম আলী উচ্চ স্বরে বলেন, ‘আমরা তো কিছু করি নাই’। এমপি বলেন, ‘তাহলে আপনারা থামাইয়া দেন’।