তারা লেডি মাস্তান বাহিনীও তৈরি করেছে: নুর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ মে ২০২২, ০৯:১৩ AM , আপডেট: ২৮ মে ২০২২, ০৯:৩১ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, এ ঘটনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিওগুলো যখন দেখছিলাম তখন আমার শরীর ঠান্ডা শীতল হয়ে আসছিল। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। রক্ত টগবগ করছে। তারা কতটুকু পৈশাচিক হলে কতটুকু হিংস্র হলে একজন মানুষকে এভাবে পেটাতে পারে। আপনারা দেখছেন ছাত্রলীগের এক নেত্রী মাথায় হেলমেট পরে লাঠি দিয়ে কীভাবে পেঠাচ্ছে। তারা লেডি মাস্তান বাহিনীও তৈরি করেছে।
শুক্রবার (২৭ মে)জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের অধীনে নির্বাচন ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার’ দাবিতে এ সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
নুর বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না। এই কারণেই অনেক সময় গালি দিয়ে বলে ‘তুই মানুষ না আওয়ামী লীগ’, কারণ তাদের কথা কাজের কোনো মিল নাই। কথায় বলে এক, কাজে আরেক। মুখে মধু, অন্তরে বিষ। বলছে সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না। অথচ সব জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মাথায় হেলমেট হাতে লাঠি, আলোচনায় ছাত্রলীগের তিলোত্তমা
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ঢাকার বাইরে আমাদের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়ার যে কথা বলেছেন এটা নিছক কোনো কথা নয়। এটা বলে সহিংসতাকে উসকে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার নেতাকর্মীদের হিংস্র বর্বর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যার ফলে ছাত্রলীগ যুবলীগের ভাড়াটে গুন্ডারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তপ্ত করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলকানা প্রশাসন, এই ভিসি ন্যূনতম কোনো ব্যক্তিত্ব নাই। আমরা বলতে চাই, যুদ্ধাপরাধের বিচার যদি ৪৩ বছর পরে হতে পারে, এতদিন পরে যদি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতে পারে, এই মাফিয়া সরকার ২০০৯ সাল থেকে যতগুলো হত্যা করেছে, বিরোধী দলের ওপরে সশস্ত্র হামলা করেছে প্রত্যেকটি হামলার বিচার হবে।
নুর বলেন, ছাত্রদলের যেসব ভাই বন্ধুরা আহত হয়েছেন, তাদের জন্য আমার সমবেদনা, তাদের এই সংগ্রাম বৃথা যাবে না। রক্ত এবং ত্যাগ ছাড়া ইতিহাসে কোনো আন্দোলন সফল হয়নি। আজকে এই মাফিয়া সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে। হাইকোর্ট রক্তাক্ত হয়েছে। বিচারপতি আজ কোথায়? আজকের পত্রিকাগুলো দেখেন। কয়েক দিন পরে আপনাদের ওপরও ওরা হামলা করবে। শ্রীলংকায় দেখেননি, প্রশাসনের লোকজনকে কিন্তু পিটিয়ে পানিতে ফেলেছে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, গতকালকে পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান করছিল। সিভিলে এবং পোশাকে অবস্থান নিয়েছিল। হাইকোর্ট, হাতিরপুল, কাঁটাবন, শহীদ মিনারে অবস্থান করছিল। তাদের প্ল্যান ছিল, ছাত্রলীগ যদি না পারে তাদেরকে শক্তি সঞ্চার করতে তখনই তারা আক্রমণ চালাবে। দেখেছে যে, ছাত্রলীগ অস্ত্রসহ অবস্থান নিয়েছে এজন্য আর তাদের দরকার হয়নি। এজন্য পুলিশ অ্যাকশনে যায়নি। না হলে পুলিশ অ্যাকশনে যেত। পুলিশ ভাইদেরসহ সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বলতে চাই, দেশে আগুন লেগে গেছে, এই আগুনে যে কেউ ছারখার হয়ে যেতে পারে। সুতরাং এই আগুন থেকে যদি কেউ বাঁচতে চান একটাই রাস্তা, এই মুহূর্তে একটা নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এই সংঘাত সহিংসটা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তাফা জামাল হায়দার, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপা সভাপতি খন্দকার লূৎফর রহমান প্রমুখ।