আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানিতে আতঙ্কিত ঢাবি শিক্ষার্থীরা

আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানিতে আতঙ্কিত ঢাবি শিক্ষার্থীরা
আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানিতে আতঙ্কিত ঢাবি শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয়তাবাদীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক সানাউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে ছাত্র অধিকার পরিষদ বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের উপর ছাত্রলীগের সহিংস হামলা ও আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত, শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে গুলি চালালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা পুরোপুরি নির্বিকার। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ এই ঘৃণিত হামলার তীব্র নিন্দা জানায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে।

ছাত্র সংগঠগুলোর বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি। কিন্তু তথাকথিত দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে বরাবরের মতোই দলীয় রাজনীতির ক্রীড়ানক হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন। পবিত্র শিক্ষাঙ্গন হয়ে উঠেছে ভয়ের অভয়ারণ্য।

এতে আরও বলা হয়, দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া ডাকসুর নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে সকল দল ও মতের কিছুটা সহাবস্থান নিশ্চিত হয়েছিল। অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতার সেই ধারাকে নস্যাৎ করতে পেশীশক্তি ও কালোটাকা নির্ভর দখলদার বাহিনী শিক্ষাঙ্গনে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে।

এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, গণতান্ত্রিক চর্চা ও সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চর্চার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন সমূহ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার অনুরোধ করছি এবং অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে বিবৃতিতে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিরও দাবি জানানো হয়।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের হামলায় ভয় ও অনিরাপদ হয়ে উঠছে ঢাবি

এর আগে এদিন দুপুরে রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। সেখানে ছাত্রলীগের এক কর্মীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে, ছোড়া হয়েছে গুলিও। দেশের সর্বোচ্চ আদালত চত্বরে ঢুকেও অনেককে মারধর করা হয়। এসব ঘটনায় ছাত্রদলের ৪৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

তবে ছাত্রলীগের কর্মীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংগঠনটি। পাল্টা অভিযোগ করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আজকে (বৃহস্পতিবার) ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাঁরা হাইকোর্টের ভেতর থেকে সশস্ত্র অবস্থায় মিছিল শুরু করেছে।

এদিকে, একই ঘটনায় বিবৃতি দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে প্রগতিশীল আট ছাত্র সংগঠন। বিবৃতিতে ৮ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বিভিন্ন সময় ছাত্র সংগঠনগুলো ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের হামলা তাদেরকে বারবার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে শিক্ষার্থীদের সামনে প্রমাণ করেছে।