লাইভ করা ছাত্রলীগ নেতা মনির মহিষ চুরির আসামি
পরীক্ষা চলাকালে হল থেকে ফেসবুকে লাইভ করা ছাত্রলীগ নেতা মনির হোসেন সুমনের বিরুদ্ধে মহিষ চুরির অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় করা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি তিনি। মামলাটির বিচার চলছে ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ আগামী আগামী ২৭ এপ্রিল নির্ধারিত আছে। মহিষ চুরির মামলায় বর্তমানে জামিনে রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা মনির।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৬ জুন রাতে জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার গুড়পাড়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের গোয়ালঘর থেকে দুটি মহিষ চুরি হয়। পরে ১৮ জুন কোটচাঁদপুর থানায় অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী পরিবার। পরে কালীগঞ্জের চাচড়া থেকে এবং একই গ্রামের সেলিম হোসেনের বাড়ি থেকে মহিষ দুটি উদ্ধার করা হয়।
পরে ২০২০ সালের ২৭ জুন সেলিম হোসেনসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কোটচাঁদপুর থানায় মামলা (নম্বর ৭) করেন নাসির উদ্দিন।কোটচাঁদপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৌফিক আনাম কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিবনগর গ্রামের মনির হোসেন সুমনসহ তিনজনকে পলাতক ও দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চার্জশিট দেন। পরে পলাতক আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে সবাই জামিনে বেরিয়ে আসেন।
তদন্ত কর্মকর্তা বর্তমানে শৈলকুপার হাটফাজিলপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ তৌফিক আনাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আদালতে মামলার চার্জশিট যখন দাখিল করেছি তখন এর সত্যতা তো অবশ্যই ছিল। পাঁচজনের নামেই চার্জশিট দাখিল করেছিলাম। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে, আদালতই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
আরো পড়ুন: চাঁদার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বে বন্ধুকে হত্যা, গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
মামলার বাদী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মনির হোসেন সুমন কালীগঞ্জ ও কোটচাঁদপুরের নেতাদের এনে মহিষ চুরির মামলাটি বার বার তুলে নিতে বলছিল। আমি ভয়ে ছিলাম। তবে আমার মহিষ চুরি হলো, অবশ্যই জড়িতদের শাস্তি চাই।’
এদিকে মহিষ চুরির ঘটনায় সুমনের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে সে সময় ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগ চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল।
রানা হামিদ বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় তদন্ত কমিটি ঘটনার তদন্ত করেছিল।’ তবে ওই ঘটনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা জানননি তিনি। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের গতকাল শনিবার বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও গ্রাফিকস ডিজাইন কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কালীগঞ্জ উপজেলার প্রিজম কম্পিউটার একাডেমির পরীক্ষার্থী হিসেবে মনির হোসেন পরীক্ষা দেন। এদিন প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলাকালে মনির হোসেন ফেসবুকে লাইভ শুরু করেন। এ নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।