ঘুম থেকে তুলে মাস্টার্সের ছাত্রকে পেটালো তৃতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরা
ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের আখলাকুজ্জামান অনিক নামের এক শিক্ষার্থী। আহত অনিক বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আজ শনিবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে আটটায় এই ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার অনিক জানান, হামলায় দশ থেকে বারো জন অংশ নেয়। এদের মধ্যে তিনি চারজনকে চিনতে পেরেছেন। তারা হলো- সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের মাসফিউর রহমান, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সফিউল্লাহ সুমন (পিটার), ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাব্বির আল হাসান, সাংবাদিকতা বিভাগের নাইমুর রশিদ নাঈম। পরের তিনজন ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। হামলাকারীরা হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীবের অনুসারী।
অনিক জানান, রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ দরজা খোলার জন্য বাহির থেকে নক করা হয়। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই তারা আমার ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা মাথায় স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে। এতে আমার মাথা ফেটে যায়। এছাড়া এলোপাতাড়ি মারধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।
তিনি আরও বলেন, মারধরের পর বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসি। আজ সন্ধ্যায় স্নাতকোত্তর ২য় সেমিস্টারের অভিনয় কোর্সের পরীক্ষা আছে।
হামলার কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, তিনদিন আগে হামলাকারীদের মধ্যে কেউ একজন মেয়ে নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিল। তাদের অভিযোগ, আমি নাকি তাদের সাথে সেখানে দুর্ব্যবহার করেছি। অথচ সেই দিন আমার পরীক্ষা ছিল। হামলার সময় তারা আমার ফোন কেড়ে নেয়। এদের হামলায় আজকে হয়তো আমি মরেই যেতাম।
আরও পড়ুন- ঢাবিতে বেতন ছাড়াই চাকরি করছেন ২৮ শিক্ষক
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীব বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে হল প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। এক্ষেত্রে আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। অভিযুক্তরা আপনার সঙ্গে রাজনীতি করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলে যারা থাকে তারা তো কারো না কারো রাজনীতি করে।
হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির জানান, ঘটনাটি শুনেছি। ইতোমধ্যে দায়িত্বরত শিক্ষককে সেখানে পাঠিয়েছি। তিনি কথা বলেছেন। তবে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। আমরা আগামীকাল দশটায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।