০৫ মার্চ ২০২২, ১৫:৫০

এডিসি হারুন ওসি প্রদীপের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন: নুর

এডিসি হারুন ও নুরুল হক নুর  © সংগৃহীত

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর রশীদ মেজর সিনহা হত্যা মামলার ঘটনায় বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডাকুসর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

শনিবার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। গতকাল শুক্রবার আয়োজিত কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা, হামলা ও আটকের অভিযোগ করে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নুর বলেন, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। এর আগে গত ৫ দিন যাবত প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি যে তিন দফা দাবিতে আমরা একটা সমাবেশ করবো। প্রথম দফা দাবি ছিল, চাল-ডাল-তেল-পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। দ্বিতীয় দাবি-তেল-গ্যাস-পানির প্রস্তাবিত বর্ধিতমূল্য বাড়ানো যাবে না। তৃতীয়ত, অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম কমাতে হবে।

‘‘এসব একেবারেই জনসম্পৃক্ত দাবি, জনগণের মনের কথা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের এই প্রোগ্রাম করার কথা ছিল। যথাযথ নিয়মে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদেরকে এই কর্মসূচি না করার জন্য বলেনি। কিন্তু আমরা দেখলাম, কর্মসূচির আগের দিন, রাত দশটায় শাহবাগ থানা থেকে আমাদের বলা হলো, আমরা যেন শহীদ মিনারে কর্মসূচি না করি।’’

আরও পড়ুন: আর কোনো কিছুর দাম বাড়তে দেয়া হবে না: নুর

তিনি বলেন, আমরা যখন তাদের কাছে জানতে চাইলাম কি কারণে কর্মসূচি করতে পারবো না। তখন তারা বললেন- সেখানে স্বেচ্ছাসেবক লীগেরও কর্মসূচি আছে। ডাকসুর ভিপি হয়ে (আমি এখনও ভিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, আমাকে কর্মসূচি করতে দেবে না, সেখানে মহানগরের স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মসূচি করবে, এটা কোনো যুক্তিতে আসে না।

কোনো ধরনের উস্কানী ছাড়াই পুলিশ তাদের উপর হামলা করেছে অভিযোগ করে নুর বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছু বলেনি। তারপরও আমরা এই কথা শোনার পরে, সংঘাত এড়াতে আমরা শহীদ মিনারে যাইনি। মিছিল নিয়ে আমরা শাহবাগ থেকে ঘুরাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো ধরণের উস্কানি ছাড়াই আমাদের ওপরে আক্রমণ করে।

তিনি বলেন, আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর রশীদ। এই হারুন অর রশীদ ওসি প্রদীপের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। শাহবাগে সমস্ত আন্দোলন কর্মসূচি সেটা ছাত্রদের অথবা শিক্ষকদের। সবার ওপরে এই হারুন অর রশীদ জঘন্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তাদের ওপরে হিংস্র পশুর মতো আক্রমণ করে।

নুর আরও বলেন, মোদিবিরোধী আন্দোলনে গত বছর ২৭ মার্চ আমাদের চারজন ছাত্র রবিউল, সজল, সোহাগ ও আল-আমিনকে এই হারুন ধরে নিয়ে গিয়েছিল শাহবাগ থানায়। ছাত্র অধিকার পরিষদ করার অপরাধে তাদেরকে গামছা দিয়ে বেধে, চোখে কাঁচা মরিচ দিয়ে নির্যাতন করেছে।

এডিসি হারুনের প্রত্যাহার দাবি করে নুর বলেন, গতকাল শুক্রবার মিছিলের মধ্যে আমরা যখন তার সাথে কথা বলতে গেছি যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি শেষ করতে চাই, আমরা প্রেসক্লাবে সমাবেশ করবো। সেখানে প্রদীপের ভূমিকায় থাকা হারুন আমাকে হুমকি দিয়েছে যে দেখি কেমনভাবে তোমরা সভা সমাবেশ করো। এই ধরনের আচরণ একজন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হতে পারে না।