ছাত্রলীগ সভাপতি বিএনপি পরিবারের সন্তান, অভিযোগ সহ-সভাপতির
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বিএনপির পরিবারের সন্তান। এমন অভিযোগ করেছেন সংগঠনের সহ সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। তখন তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম (এস এম) হলে থেকে ভর্তি কোচিং করেছিলেন। এস এম হলে তখন জয়ের আপন ফুফাতো ভাই সর্প বাবু ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তার রুমে থেকে পড়াশোনা করতেন জয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিতে নীলক্ষেত অবরোধ
ছাত্রলীগের এই সহ সভাপতি আরও অভিযোগ করেন, ১৯৯১ সালে উজিরপুর থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন জয়ের বাবা। তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তার বাবা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বীমা কোম্পানীতে চাকরি করেছিলেন। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সে সুবাদে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে জয়ের বাবা বিএনপি থেকে পুনরায় মনোনয়ন চান। এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিলো। ফ্রিডম পার্টি, জামায়াত-বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। সে নির্বাচনে জয়ের বাবা ডামি ক্যান্ডিডেট ছিলো।
জয়ের আপন চাচাতা ভাই জাহাঙ্গীনরগর ইউনিয়নে ২০০১ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘরবাড়িতে হামলা করেছে। নেতাকর্মীদের মারধর করেছে। খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করে জেলে নেয়ার পর তার চাচাতো ভাইয়ের নের্তৃত্ব বিএনপির মিছিল হয়েছিলো। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি করেছে তার ভাই। পরে তার (জয়) ক্ষমতা বলে নৌকাকে হারিয়ে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে তার চাচাতো ভাইকে জিতিয়েছেন।
নিজের পরিবারের বিষয়েও এসময় কথা বলেন ইয়াজ আল রিয়াদ। তিনি বলেন, তার বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরিবারের অন্যদেরও আওয়ামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার বর্ণনা দেন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি দ্বারা পরিবারের লোকজনের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, কিছু পাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ করি না। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে, নেত্রীকে ভালোবেসে রাজনীতি করি।
আরও পড়ুন- ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীদের মূল ফটকে অবস্থান
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকেও উদ্দেশ্য করেও কথা বলেন এই সহ সভাপতি। তিনি বলেন, জয়-লেখক অনেক অনিয়ম করছেন। সংগঠনবিরোধী কাজ করছেন। যারা আওয়ামী পরিবারের সন্তান তাদেরকে তারা দূরে সরিয়ে রাখেন। ঢাকা কলেজে মামুন নামে একজন রয়েছেন। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলো। মামলা দেয়া হয়েছিলো তার নামে। অথচ আজ উল্টা প্রেস রিলিজ দিয়ে বলছেন সে ছাত্রদল করতো।
ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, নেত্রী বলেছিলেন ভালো কর্মী হতে হবে। একই সঙ্গে ভালো ছাত্রও হতে হবে। নেত্রীর উপদেশ মেনে নিয়ে আমি সে চেষ্টা করেছি। বছরে ২০০টা করে বই পড়ি আমি।
তিনি বলেন, অভিযোগ উঠতেই পারে। তৃণমূলের কর্মীরা কানাঘুষা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীরা কানাঘুষা করছে। বিএনপি পরিবারের একজন হয়ে কীভাবে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে পদ পেয়েছে। এসব বিষয় আপনাকেই (জয়) ক্লিয়ার করতে হবে। ছাত্রলীগের শীর্ষ নের্তৃত্ব নিয়ে যাতে প্রশ্ন না উঠে সেজন্য স্বচ্ছ থাকা জরুরি বলে আমি মনে করি।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।