০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৩৯

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পায়ে ভাঙল বটতলার ইতিহাসবদ্ধ ফলক

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা  © টিডিসি ফটো

১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে অবস্থিত বটতলায় এক ছাত্রসমাবেশে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়, যা মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণার উৎস ছিল। এর আগে ১৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের কেন্দ্রও ছিল এই বটতলা।

পরবর্তীতে এই বটতলা হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর একটি। কয়েক বছর আগে এটির সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে।

বছরের বিভিন্ন সময় এর পাশে আয়োজন করা হয় নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগেও আয়োজন করা হয় সভা-সমাবেশ। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের আড্ডারও অন্যতম স্থান এই বটতলা।

এদিকে, আজ মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) বটতলার সামনে অপরাজেয় বাংলায় আয়োজন করা হয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা। অপরাজেয় বাংলায় পাদদেশে তৈরি করা হয় মঞ্চ। এ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে ওই এলাকায় জমায়েত হয়।

এদিকে, দুপুরের দিকে মঞ্চের সামনে বসাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিমউদদীন হল ছাত্রলীগ কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন।

সংঘর্ষ চলাকালীন সময় ও তার আগে-পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পায়ে লেগে বটতলার ইতিহাসবদ্ধ ফলক ভেঙ্গে গেছে। তাছাড়াও আলোচনা সভা চলাকালীন সময়েও বটতলার ইতিহাসবদ্ধ ওই ফলকের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অনেককে। 

বটতলায় ইতিহাস লিপিবদ্ধ লোহার ফলক রয়েছে মোট চারটি। পরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লোহার ফলক তিনটি ভেঙ্গে গিয়ে বাঁকা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর রক্ষা করার দায়িত্ব ছাত্র-শিক্ষক সবার। বাইরের লোকজন এভাবে ক্যাম্পাসে এনে কর্মসূচি পালন করার পর এরকম ঘটনা ঘটলে তো যারা আয়োজক তাদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ  ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর।

 

বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ ঐতিহাসিক বটতলা। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ বটগাছটি ধ্বংস করে দেয়।

পরে ১৯৭২ সালে অ্যাডওয়ার্ড মুর কেনেডি বাংলাদেশ সফরে আসেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে বন্ধুত্ব ও আশার প্রতীক হিসেবে তিনি বর্তমান বটগাছটি রোপন করেন।