পদপ্রত্যাশীদের বাধায় মধুর ক্যান্টিনে যেতে পারে না কেন্দ্রীয় ছাত্রদল
পদপ্রত্যাশীদের বাধায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে যেতে পারেন না কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতারা। মধুর ক্যান্টিনে গেলেও শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বসতে দেয়া হয়। বাকীদের বসতে দেন না পদপ্রত্যাশীরা। ফলে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ক্যাম্পাসে গেলেও মধুর ক্যান্টিনে যান না। প্রায় ১ মাস ধরে এ অচলাবস্থা চলে আসছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতারা।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সরাসরি ভোটে ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ইকবাল হোসেন শ্যামল। এর ২ মাস পর ৬০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রদল। কিন্তু কমিটির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারে নি তারা।
আরও পড়ুন- ৩১ বছর ধরে বন্ধ নির্বাচন, চাকসু এখন ‘বিয়ের ক্লাব’
পদপ্রত্যাশীদের নেতৃত্বে রয়েছেন ২০০৫-২০০৬ সেশনের চারজন। তারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আল ফয়সাল, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ঝলক মিয়া, ১ নম্বর সহ সাধারণ সম্পাদক মো. মুতাছিম বিল্লাহ, খায়রুল আলম সুজন।
তাদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নেতাদের বিভিন্ন সেশনের মোট ৩৪ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন, ঢাকা কলেজের ১২ জন, তিতুমীর কলেজের ১৫ জনসহ কবি নজরুল সরকারি কলেজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, তেজগাঁও কলেজ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের আরো ১৭ জন নেতাকর্মী আছেন।
মধুর ক্যান্টিনে বসতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে কথা বললে তারা জানান, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের গাফেলতির কারণে কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এখন মধুর ক্যান্টিনে গেলেও বসার চেয়ার পাই না। হেনস্থ হওয়ার ভয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও মধুর ক্যান্টিনে আসেন না বলে জানান তারা। নেতারা বলেন, পদপ্রত্যাশীদের বাধার মুখে একবার সভাপতি খোকন মধুর ক্যান্টিনে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ থেকে তিনি চলে যান। সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী পর্যন্ত এসে চলে যান। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির কেউই মধুর ক্যান্টিনে আসেন না। পদপ্রত্যাশী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দখলে রাখেন নির্ধারিত টেবিল।
আরও পড়ুন- ২২ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হচ্ছে কাল
সম্প্রতি বিভিন্ন ইউনিটের কর্মী সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য সিভি চেয়েছেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তবে পদপ্রত্যাশীদের দাবি, এরকম বারবার উদ্যোগ-আশ্বাস দিয়েও কমিটি দেন নি তারা। যার কারণে বাধ্য হয়ে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে শেখ আল ফয়সাল বলেন, আমরা বিদ্রোহী না। আমরা মধ্যুর ক্যান্টিনে কাউকে আসতেও নিষেধ করি নাই। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা দ্রুত কমিটি দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মো. মুতাছিম বিল্লাহ বলেন, আমরা ২৬ মাস অপেক্ষা করেছি। কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা রাজনীতি করি অথচ আমাদের কোনো সাংগঠনিক পরিচয় নেই। ফলে নেতাকর্মীরা এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমাদের দিয়েই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে হবে ব্যাপারটা এমন না। তাদের কাছে যেসব নেতাকর্মীকে যোগ্য মনে হয় তাদের দিয়েই পূর্ণাঙ্গ করুক। কিন্তু আমরা চাই নেতাকর্মীরা হতাশা থেকে মুক্তি পাক।
পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির কাজ চলছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আগে-পরে হয়ে যাবে। আমাদের জেলা সম্মেলনের কারণে পিছিয়ে গেছি। নতুবা আগেই হয়ে যেত।