৩০ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৫১

ঢাবিতে এসে হামলার শিকার সিলেটের ছাত্রলীগ নেতা

আহত ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল হাদী  © সংগৃহীত

সম্মেলন চাওয়ায় নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন সিলেটের কানাইঘাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাদী। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ডাচের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘতে। এতে হাদীর মাথা ফেটে যায়। 

ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় সম্মেলন চাওয়ার কারণে ‘শীর্ষ নেতৃত্বের’ নির্দেশেই হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ হাদীর। এই ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

হাদীর অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। হামজা ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী।

অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি সিলেট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসি। শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাসের এক কোনায় রেলিংয়ে বসে চা খাচ্ছিলাম। তখন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের মো. রাব্বি ও জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের পলাশ রায় সৌরভসহ আট থেকে নয়জন আমাকে ঘিরে ধরে বলে, ‘তুই এখানে আসছিস কেন?’ এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমির হামজা আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকে এবং অন্যান্যরা আমার পাঞ্জাবির কলার চেপে ধরে এলোপাতাড়িভাবে লাখি, চড়থাপ্পর মারতে থাকে। এরই মধ্যে রাব্বি আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি স্টিলের পাত দিয়ে মাথার পিছন দিকে আঘাত করে গুরুতরভাবে জখম করে। আমাকে মারধর করার সময় তারা আমার হাতে থাকা মোবাইল কেড়ে নিয়ে রাস্তায় ছুড়ে ভেঙে ফেলে এবং আমার পাঞ্জাবির ডান পকেটে থাকা নগদ ৫ হাজার ৬০০ টাকা নিয়ে যায়। আমার চিৎকারে আশেপাশে লোকজন এগিয়ে আসতে দেখে তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরবর্তী আমি উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় একটি রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাই। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মাথার ফাটা স্থানে ১৩টি সেলাই দেন।

হাদী বলেন, ছাত্রলীগের নানা অনিয়ম, অন্যায়-অবিচার, সম্মেলন নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করায় শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কয়েকদিন আগে মধুর ক্যান্টিনেও জয় ভাইয়ের সামনেই আমির হামজা আমার কলার চেপে ধরে বলেছিল, আমি কেন লেখালেখি করি। এসময় হাদী এই হামলার সাংগঠনিক বিচারেরও দাবি জানান।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মেশকাত হোসেন বলেন, সাংগঠনিক কাঠামোর বাইরে না গিয়ে ছাত্রলীগের একজন কর্মী সম্মেলন চাইতেই পারেন। সেজন্যে তাকে মারধর করে ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। আমি নিজে বিষয়টি জয় ভাইকে জানিয়ছি। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এখন তো তৃণমূলের কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই ভয় পাবেন।

এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে আমির হামজা বলেন, ওই সময় আমি ঘটনাস্থলেই ছিলাম না। যারা সম্মেলন চাচ্ছে, তারা আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করছে।

শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।