কমিটি গঠন নিয়ে ফরিদপুর ছাত্রলীগে উত্তেজনা, বিক্ষোভ
টাকার বিনিময়ে বিএনপি নেতার ছেলেকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার অভিযোগে পাবনার ফরিদপুরে গত তিনদিন ধরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডেমডরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের উদ্যোগে ডেমরা বাজারে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রলীগের কয়েকশো নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিক্ষোভকারী ছাত্রনেতাদের অভিযোগ, জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে গত ৫ অক্টোবর বিএনপি নেতার ছেলেকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করেছেন। এরই মধ্যে এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
বর্তমানে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরে ক্ষমতাসীন দলের এই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের এই প্রতিবাদ বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান সরকার ও পৌর মেয়র খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ।
ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শুধুমাত্র প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে সোহেল রানাকে সভাপতি ও জাহিদ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকা সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসানের বাবা আব্দুল হামিদ ২০১৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি বি-নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা যুবদলের আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া সভাপতি সোহেল রানার পিতা জহুরুল ইসলাম বিনগর ইউনিয়ন বিএনপি'র পদবীধারী নেতা বলেও অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের।
এ ঘটনায় ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা গত তিন দিনে উপজেলা শহর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে দফায় দফায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। ছাত্রলীগের এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে সমর্থন দিচ্ছেন উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচির কারণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক বিষয়টি তদন্তের জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কমিটির সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুরাদ হায়দার টিপু ও উপদপ্তর সম্পাদক ইমরান শেখ। তারা আগামী সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে সভাপতির নিকট প্রতিবেদন জমা দিবেন বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম মুরাদ বলেন, উৎকোচের বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের সন্তানকে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের পদ দিয়ে কমিটি বাণিজ্য করেছেন জেলা ছাত্রলীগ। তাই ছাত্রলীগের নেতারা বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
তবে কমিটি গঠনে উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী বলেন, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শক্রমে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এখন তাদের অনেকে ভিন্ন কথা বলছেন। এ অবস্থায় পদবঞ্চিত নেতারা ভিত্তিহীন অভিযোগ করে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছেন।