বিশ্ববিদ্যালয় খুললে সরকার অস্থিরতার আশঙ্কা করছে: আনু মুহাম্মদ
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত যে শিক্ষকদের হল পরিচালনা করার কথা, তারা সেই দায়িত্ব সন্ত্রাসীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে সরকার অস্থিরতার আশঙ্কা করছে। তার মানে, তারুণ্য ও স্বাধীন বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে তাদের ভয়।
আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক ছাত্র সমাবেশে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। শিক্ষা দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ) এই সমাবেশের আয়োজন করে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার লুটেরা শক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। সেই প্রতিবাদের ভয়েই তারা যত বেশি দিন সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, একদিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, অন্যদিকে আছে মেরুদণ্ডহীন কিছু প্রশাসন। এই দুয়ের সমাবেশ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করছে। আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের সময় এনএসএফ হয়েছিল, আজ ছাত্রলীগের ভূমিকা সেই এনএসএফের মতো।’
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এখন আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের আরেকটি রূপ দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আনু মুহাম্মদ।
আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, একসময় শিক্ষা আন্দোলন করেছেন, এমন অনেক নেতা বিভিন্ন সময়ে সামরিক শাসকের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে শিক্ষার দাবিগুলো পূরণের পরিবর্তে শিক্ষাকে উল্টো দিকে নিয়ে গেছেন। সে কারণেই আজকের বাংলাদেশে শিক্ষা অনেক বেশি বাণিজ্যিক, শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকীকরণ ও বৈষম্য অনেক বেশি।
চলতি মাসেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। হলগুলোতে গণরুম নামক নির্যাতনের কারাখানায় শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকার ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অবসান ঘটাতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে সম্মান নিয়ে থাকতে পারেন, তার জন্য প্রশাসনের শিক্ষকদের মেরুদণ্ড নিয়ে দাঁড়াতে হবে।
ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীনের সঞ্চালনায় এই সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বাসদের সদস্য ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শোভন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাজীব গান্ধী রায় প্রমুখ বক্তব্য দেন।