দুর্নীতিবাজদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবি

রাজু ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মসূচি
রাজু ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মসূচি  © টিডিসি ফটো

দেশের সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রকাশসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা ভাস্কর শিল্পী রাশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম বাপ্পীসহ প্রমুখ।

আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও সংগ্রামের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথে সবসময় প্রতিবাদ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এর ধারাবাহিকতায় দেশের সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রকাশসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।

আমিনুল ইসলাম বলেন, গত ১১ জানুয়ারী পাচার করা অর্থে বিদেশে বিলাসবহুল বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনেছেন এমন বাংলাদেশী নাগরিকদের তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বা বাড়ি ক্রয়ের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের এক রুলে দুদককে অন্যতম রেসপন্ডেন্ট করা হয়েছে।

অপরাধীদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিদেশে বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনেছে, এমন বাংলাদেশী নাগরিকদের তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো পর্যন্ত দুদকে প্রেরণ করেনি। আমরা অবিলম্বে উক্ত তালিকা প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।

ভাস্কর শিল্পী রাশা বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে গত ২২ নভেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ একটি আদেশ দেন। ওই আদেশে হাইকোর্ট অর্থ পাচারকারী, দুর্বৃত্তদের নাম-ঠিকানার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা, তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন তালিকা প্রেরণ বা প্রকাশের ব্যবস্থা করেননি যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি বন্ধে দুদক দেশের মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের ১০১টি খাতে দুর্নীতি চিহ্নিত করেছে। তবে দুর্নীতির উৎস হিসেবে চিহ্নিত এসব খাতের মধ্যে মাত্র ২৫টিতে অভিযান চালানো হচ্ছে যা পুরোপুরি কার্যকর নয়। দুদককে আরোও দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, গত বছর প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে পাচার করা হয়েছে। সেই অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ ও পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

তিনি বলেন, দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধি। দুর্নীতিবাজরা দেশ ও জাতির শত্রু। জনগণের টাকা লুট করে দুর্নীতিবাজরা সরকার ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। কিছু দুর্নীতিবাজদের হাতে কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য জিম্মি থাকতে পারে না। এদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

এ দেশে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারকে অবিলম্বে সকল দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা জাতির সামনে প্রকাশ করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় আমরা নিজ উদ্যোগে দেশ ও জাতির শত্রু সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করার মাধ্যমে জনগণের নিকট এদের মুখোশ উন্মোচন করব।


সর্বশেষ সংবাদ