সাবেক নেতাকে মেরে রক্তাক্ত, নেতৃত্বে ঢামেক ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক

  © সংগৃহীত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সংগঠনের সাবেক এক নেতাকে বেদম মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। মারধরে আহত ওই নেতা বলছেন, তাঁকে রড দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শহীদ ডা. ফজলে রাব্বী হলে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত সবাই মেডিকেলের কে-৭২ ব্যাচের ছাত্র ও বর্তমানে ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসক।

মারধরের শিকার এ এস এম আলী ইমাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক ও কলেজ ডিবেটিং ক্লাবের সাবেক সভাপতি। তার অভিযোগ, ভিন্ন ‘গ্রুপের’ অনুসারী হওয়ায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মো. আল-আমিন, সাধারণ সম্পাদক জাকিউল ইসলাম ফুয়াদ ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খানের নেতৃত্বে তাকে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জের ধরেই মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে। ফুয়াদ আমার সহপাঠী, তার মতো আমিও মেডিকেল ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে প্রার্থী ছিলাম। দায়িত্ব পেয়ে তাঁরা অন্য গ্রুপের কর্মীদের হল থেকে বিতাড়িত করা শুরু করেন। তাঁদের গ্রুপের বাইরে একজনের পর একজনকে টার্গেট করছিলেন। বৃহস্পতিবার আমার পালা ছিল। রাতে আমাকে পুকুরের দিকে ডাকা হয় ইন্টার্নশিপের রোস্টার নিয়ে কথা বলার জন্য। সেখানে শাহরিয়ার, ফুয়াদসহ ১০ থেকে ১২ জন উপস্থিত ছিলেন। যাওয়ার পর প্রয়োজন ছাড়াই তাঁরা আমার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি করেন। সভাপতি শেখ মো. আল-আমিনের অনুসারী আমাদের কনিষ্ঠ ইরতিজা ফয়সাল (কে-৭৩ ব্যাচের ছাত্র) আমার মাথায় অনেকগুলো লাথি মারে। এতে আমি চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। তখন আমার বমিও শুরু হয়। এরপর গণরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। বুঝতে পারছিলাম আমি কোথাও যাচ্ছি, কিন্তু কোথায় যাচ্ছি বুঝতে পারছিলাম না। গণরুমে যাওয়ার পর সেখানেও আমার বমি হয়। এমন অবস্থায়ও তাঁরা আমাকে মারছিলেন। গণরুমে রড রাখা ছিল। কারণ, এর আগেও অনেককে সেখানে পেটানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সভাপতি আল–আমিন শাহরিয়ারের হাতে রড তুলে দিয়ে বললেন, তোরা মার, আমি বাইরে আছি। দরজা আটকে দিয়ে আল–আমিন বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যাতে আমাকে বাঁচাতে কেউ না আসতে পারেন। গণরুমে জাকিউল, শাহরিয়ারসহ আট সহপাঠী মিলে আমাকে পেটান। বেশ কয়েকবার তাঁদের কাছে আমি পানি চেয়েছি, বসতে দিতে বলছিলাম। সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত এই নির্যাতন চলে। মারধরে আমার বাঁ পায়ের ফিবুলায় গুরুতর আঘাত লেগে ফেটে গেছে। এছাড়া পুরো শরীরেই আঘাত আছে। আমি পুরো ঘটনাটি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানকে জানিয়েছি। তিনি ন্যায্য বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিউল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমার জানামতে, এ ধরনের কিছু ঘটেনি। হলে কার সঙ্গে কার ব্যক্তিগত সমস্যা, এসব আমার জানার কথা নয়।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা পরিচালক কর্নেল মো. নাজমুল হকের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কল কেটে দেন। এছাড়া ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ