বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ

  © টিডিসি ফটো

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার নীতিগত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। আজ বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা অবিলম্বে বাতিল ঘোষণা না করলে ছাত্রদের নিয়ে প্রতি আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।

সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের পরিচালনায় ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাবলিক বিশ্ববদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে অনলাইনে ক্লাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এই ক্লাসগুলোতে বড় অংশের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এর পেছনের কারণ হিসেবে ছিলো ডিভাইস না থাকা, ডাটা কিনতে না পারা, নেট সমস্যাসহ আরও কিছু বাস্তব পরিস্থিতি। এই সমস্যাগুলো এখনও সমানভাবে বিদ্যমান। শহরের বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারে বেড়ে ওঠা একজন শিক্ষার্থী যতটুকুও অনলাইন সিস্টেমে অভ্যস্ত গ্রামের একজন শিক্ষার্থী এখান থেকে অনেক দূরে। ফলে অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা বৈষম্য তৈরি করবে ও ভর্তি পরীক্ষার্থীদের বিপদে ফেলবে। 

বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে একদিনে এক-দেড় ঘণ্টার একটা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় মেধার বাস্তব মূল্যায়ন সম্ভব নয়। ফলে অবস্থিত কাঠামোর মধ্যেই বৈষম্য বিদ্যমান। এখন এই পরীক্ষা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হলে প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের সম্ভাবনা আরও তলায় গিয়ে ঠেকবে। ভর্তি পরীক্ষা একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যৎ কর্মজীবনকে প্রভাবিত করে। যদিও সরাসরি ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্যেও বহু গলদ রয়েছে। তবু্ও এটা দীর্ঘদিন ধরে চলে এসেছে এবং শিক্ষার্থীরাও এর সাথে অভ্যস্ত। তাই সরাসরি ভর্তি প্রক্রিয়া অধিক যৌক্তিক। 

বক্তারা বলেন, অনলাইন ক্লাস যেখানে পরীক্ষামূলক পর্যায়েই ব্যর্থ, সেখানে নানারকম ত্রুটি ও বৈষম্যের সুযোগ বজায় রেখে ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতিতে চলে যাওয়া কোনো বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত বলে আমাদের মনে হয় না। ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন ফরম বিক্রি করে বিরাট অংকের টাকা আয় করা ছাড়া এ থেকে আর কোনো অর্জনের দিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দু’একটা প্রতিষ্ঠান সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষাগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করে বিভাগীয় পর্যায়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এভাবে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে, বিভাগীয়-জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা নিতে পারে,সেটাই যুক্তিযুক্ত। এর আগেও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ‘অটো পাশ’ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যম্ভাবী।


সর্বশেষ সংবাদ