‘ভয় আর লোভের রোগে আক্রান্ত বাংলাদেশ’
- মো. আজহার, চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:২৫ PM , আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:৩০ PM
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ লোভ আর ভয়ের রোগে আক্রান্ত। তাই কিছু করতে গেলেই লোভ আর ভয় চেপে ধরছে। সাম্য ও শান্তির জন্য এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সবার মাঝে আমিত্ব ঢুকে গেছে। সর্বত্র ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট আর দুর্বৃত্তাচরণ দেখা দিয়েছে। যার অন্যতম উদাহরণ হলো ক্যাসিনো ব্যবসা। যা এখন সবার সামনে উন্মুক্ত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্র ইউনিয়নের দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য এসব কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, উচ্চপর্যায়ের নির্দেশ মানতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে অসাম্যের সমাজ গড়ে উঠেছে। দেশের সাড়ে চার কোটি মানুষ এখনো অর্ধাহারে জীবন যাপন করছে। সংখ্যালঘু আর পাহাড়িদের উপর চলছে নির্বিচারে নির্যাতন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করণে ছাত্র ইউনিয়নের তরুণ নেতৃত্বের প্রতি আহবান জানান তিনি।
‘পূর্ণাঙ্গ আবাসন-পরিবহন সুবিধা ও গবেষণাবান্ধব মুক্তবুদ্ধি চর্চার গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস চাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে দুই দিনব্যাপী সংগঠনটির ৩১তম কেন্দ্রীয় শুরু হয়েছে। সম্মেলনের শেষদিন চবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের নতুন কমিটি ঘোষণার কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গৌরচাঁদ ঠাকুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে শাকা সভাপতি ধীষণ প্রদীপ চাকমা। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সংসদের কোষাধ্যক্ষ জয়চন্দ্র রায়, সদস্য আতিক রিয়াদ, রাঙ্গামাটি সংসদের সভাপতি অভিজিৎ বড়ুয়া, শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবা জাহান রুমি প্রমুখ।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হওয়ার কথা ছিল বিশ্বমানের। অথচ শাটলে ঝুলে, ঘর্মাক্ত শরীর নিয়ে ক্যাম্পাসে আসতে হয় আমাদের। ক্যান্টিনের উচ্চমূল্য আর আবাসিক সঙ্কট তো আছেই। শিক্ষকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস না নিয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সময় দিচ্ছেন। ৭৩’র বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ বোধহয় শিক্ষকরা পড়েও দেখেন না। অথচ সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ব্যবস্থা চালুর কথা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, চবিতে গত কয়েক দশকে শাটলে বগি বাড়ানো হয়নি। শিক্ষার্থী বাড়লেও মান কমেছে শাটলের। এসি রুম আর গাড়িতে চড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা এসব ভোগান্তি কিভাবে বুঝবে। কয়েকটি ক্লাস, কিছু সুবিধা আর সার্টিফিকেট প্রদানই কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব হচ্ছে জ্ঞান তৈরি আর হাজার বছরের অর্জিত জ্ঞান ছাত্রদের মাঝে বিতরণ করা। কিন্তু সেটা কি আদৌও পালিত হচ্ছে?
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ বাজেটে মাত্র ৪কোটি ২০ লাখ টাকা গবেষণা খাতে রাখা হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের গড়ে মাথাপিছু এক হাজার ৯০০টাকা। অন্যদিকে তা যদি কেবল শিক্ষকদের পেছনে ব্যয় করা হয়, তাহলেও মাথাপিছু মাত্র ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ এই নগণ্য গবেষণা বরাদ্দের স্তুতি গাইতে ব্যস্ত মিডিয়াগুলো। এসময় তিনি মোট বাজেটের ৩০-৪০ ভাগ গবেষণা খাতে বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান।