সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় কারীমুল
ছাত্রদলের আসন্ন ৬ষ্ঠ কাউন্সিল ঘিরে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে সংগঠনটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হবে নতুন নেতৃত্ব। আগামী দিনের ছাত্রদলের সম্ভাব্য কাণ্ডারিদের মধ্যে তাই উৎসাহের অন্ত নেই।
বর্তমানে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত এ শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের মন জয় করতে। নিজেদের কদর বাড়ায় চাঙ্গাভাব ফিরে এসেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে।
ছাত্রদলের এবারের কাউন্সিল ঘিরে প্রচারণার দিক থেকে যারা এগিয়ে আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কারীমুল হাই (নাইম)। এর আগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি।
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার সন্তান নাইম ২০০০ সালে এএসসি এবং ২০০৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৩-০৪ সেশনে শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে অনার্স শেষ করলেও শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক কারণে আর সেখানে মাস্টার্স করা হয়নি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ (২০১৩ সালে) করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবিতে অধ্যয়নরত।
পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ছোটবেলা থেকেই জিয়াউর রহমান এবং ছাত্রদলের প্রতি তার ভালবাসা তৈরি হয়। তার দাদা মরহুম মাওলানা এ.এইচ.এম. হাই পাকিস্তান আমলে চিফ হুইপ (১৯৫৮) ছিলেন।
তরুণ উদ্যমী ছাত্রনেতা কারীমুল স্কুলে থাকাবস্থায় হাতিয়ার জিয়া নগর (তেমুহনী)-এর শাখা ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক হন (১৯৯৫)। পরে এই ইউনিটের সভাপতি হন (১৯৯৭)। ১৯৯৯ সালে হাইস্কুলে পড়াকালীন স্কুলের সভাপতি ছিলেন। ২০০৬ সালে শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজ-উদ-দৌলা হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ সালে একই হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হন।
এছাড়া দীর্ঘ ছাত্ররাজনীতির ক্যারিয়ারে ২০০৮ থেকে এ ২০১৮ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার শিকার, পুলিশি নির্যাতনের শিকার ও কর্মসূচি পালনকালে বেশ কয়েকবার আটক হন। তরুণ উদ্যমী হিসেবে ‘ইউথ ভয়েস অব বাংলাদেশ’-এর মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই।
ইতোমধ্যে জোরেশোরে নিজের প্রচারণায় নেমেছেন কারীমুল। তার প্রচারণা এবং প্রচারপত্রে দেয়া প্রতিশ্রুতি ইতোমধ্যেই কাউন্সিলরদের নজর কেড়েছে। গতানুগতিক প্রচারণার বাইরেও লিফলেট আকারে নিজের ভাবনা তুলে ধরছেন সবার সামনে। শীর্ষ নেতৃত্বে আসার সুযোগ পেলে এসব প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবে রূপদান করবেন বলেও আশ্বাস দিচ্ছেন কারীমুল।
এদিকে, ছাত্রদলের এক সূত্র জানায়, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সদ্য সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (সহ-সভাপতি) মামুনুর রশিদ মামুনের মনোনীত প্রার্থী। বিএনপি বা অন্য কোনো অঙ্গসংগঠনের মতো প্রার্থী নয়। বরং ছাত্রদল নেতার মনোনীত ছাত্রদলেরই প্রার্থী বলে উল্লেখ করেন ওই সূত্র। সে হিসেবে কাউন্সিলরদের বড় একটা অংশের ভোট কারীমুলের পক্ষে পড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন।
কারীমুলের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ মুন্না দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সকল কর্মসূচিতে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন, ৫ জানুয়ারি ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে কর্মসূচিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসার কারণে তিনি জানেন সংগঠনের কোথায় কোথায় আমাদের আরো উন্নতি করতে হবে। কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কারীমুলের পক্ষে সমর্থন দিলে তৃণমূলের সমস্যা সমাধানে কাজ করা সহজ হবে।
কাউন্সিল ঘিরে নিজের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে কারীমুল হাই নাইম বলেন, আমাদের সবার লক্ষ্যই এক। কাউন্সিলের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে দেশনেত্রী আমাদের মমতাময়ী মাকে মুক্ত করা এবং তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আন্দোলন জোরদার করা। তিনি বলেন, আমরা জানি আদালতের মাধ্যমে এর কোনো সমাধান আসবে না। তাই রাজপথই আমাদের মুক্তি একমাত্র পথ।
অঞ্চল ভিত্তিক নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে প্রচার কাজে রাঙামাটি অবস্থান করছেন। এর আগে উত্তরবঙ্গের প্রায় সব কয়টি জেলা, সিলেট, ময়মনসিংহ কুমিল্লা অঞ্চলে প্রচারণা চালিয়েছি। আশা করছি কাউন্সিলররা আগামীতে যোগ্য নেতৃত্বকে নির্বাচন করবে।