০১ নভেম্বর ২০২৫, ২২:৩০

৩৫ বছর পর জাবিতে ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠান

বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে নবীনবরণের আয়োজন করে ছাত্রশিবির  © টিডিসি

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রকাশ্যে আসে ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রকাশ্য আসার পরে এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম’ করেছে জাবি শাখা শিবির।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে নবীন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা, ক্যারিয়ার গাইডলাইন এবং শিক্ষামূলক বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে উপহার হিসেবে আল-কোরআন, ব্যাগ, কলম ও বই বিতরণ করা হয়।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আবু মো. সাদিক কায়েম।

সাদিক কায়েম নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কেবল চাকরি করা ও ভালো থাকার চেষ্টা করা কারো জীবনের উদ্দেশ্যে হতে পারে না। আমাদের লক্ষ্য হতে হবে এই অঞ্চলের মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করা। যেটা আমাদের শহীদরা করে গেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি পুরো বিশ্ব সম্পর্কে তোমাদের জানতে হবে। প্রতিটি বর্ষ কেন্দ্রীক তোমাদের পরিকল্পনা করতে হবে।’

সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমাদের খুনি হাসির প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা জুলাইয়ে গণহত্যা করেছে, তাদের বিচারের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগুলোতে এখনও বসে আছে ফ্যাসিবাদের দোসররা। সেখানে বসেই তারা ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত করছে। এদেশে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।’

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে ছাত্ররাজনীতি কলুষিত হয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থ ও সহিংসতার রাজনীতি তরুণদের সৃজনশীলতা নষ্ট করেছে। অথচ বাংলাদেশের যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, যদি আমরা যুবসমাজকে নৈতিকতা, জ্ঞান ও দক্ষতায় গড়ে তুলতে পারি, তাহলে এই জাতিই বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।’

সংগঠনের কার্যক্রম ‘গুপ্ত’ বলে যে সমালোচনা রয়েছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা কথা বারবার বলার মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার পুরোনো নীতি থেকেই কিছু মহল আমাদের ওপর গুপ্ত ট্যাগ দেয়। বাস্তবতা হলো- আজকের এতোবড় নবীনবরণ অনুষ্ঠান প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, যা নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমেও প্রকাশ পাচ্ছে। এই উপস্থিতিই প্রমাণ করে, আমরা স্বচ্ছ, ইতিবাচক ও গণমুখী রাজনীতিতে বিশ্বাসী।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলম এবং জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু। 

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠী।