কালচারাল ফ্যাসিবাদ, মুজিববাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন : সাদিক কায়েম
ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশের মানুষ আজাদি অর্জন করেছে। এখন এই কালচারাল ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদী শক্তি পুনরায় বিভাজন সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। আমি সবাইকে আহ্বান জানাই, কালচারাল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, মুজিববাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য রাজপথে খুনি হাসিনার নির্দেশে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যার ভয়াল সেই দিবস স্মরণে ‘লগি-বৈঠার লাশতন্ত্র থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের উত্থান : ২৮শে অক্টোবর প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভা হয়।
সাদিক কায়েম বলেন, ‘বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম হয়েছিল, খুনি হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হতে যারা সহযোগিতা করেছিল, তারা হলো কালচারাল ফ্যাসিস্ট। এই কালচারাল ফ্যাসিস্টরাই আজ পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অখণ্ডতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু এই কালচারাল ফ্যাসিস্টরা সেই অর্জন নষ্ট করার জন্য নানা চক্রান্ত করছে। আমাদের এই শত্রুদের চিনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে ছিলাম, তা বাস্তবায়নে ব্যর্থতা দেখা যাচ্ছে। তাই আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে খুনি হাসিনা যে অপরাধ করেছে, অক্টোবর থেকে শুরু করে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, আল্লামা সাইদীর রায়-পরবর্তী গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বেগম জিয়ার ওপর নির্যাতন, বিএনপি, ছাত্রদল ও শিবিরসহ বাংলাদেশপন্থী রাজনৈতিক দলের ওপর দমন-পীড়নের—সব অপরাধের বিচার করতে হবে।’
ডাকসু ভিপি বলেন, ‘এই দেশে সংঘটিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। খুনি হাসিনাকে দেশে এনতে হবে তাকে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সরকারকে আহ্বান জানাই—সাহস নিয়ে বিচার করুন, ছাত্রজনতা আপনাদের পাশে আছে। খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ—এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত, কারণ তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করেছে এবং দেশকে ভারতের উপনিবেশে পরিণত করার চেষ্টা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এ দেশে আর মুজিববাদ বা খুনি হাসিনার রাজনীতি চলবে না। জাতীয় নেতৃাদের প্রতি আহ্বান—এই ঐতিহাসিক সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। জুলাই বিপ্লব ও শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতি করতে হবে।’
সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক বা আদর্শিক ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু খুনি হাসিনার বিচারের প্রশ্নে ও বাংলাদেশের স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি কেউ এই ঐক্যের বিরুদ্ধে যায়—সে জামায়াত, শিবির, বিএনপি বা অন্য যে দলই হোক না কেন—আমরা তার বিরুদ্ধেও অবস্থান নেব।’