ডাকসু ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে যাবে ব্যালট
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৭:৩৫ PM , আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৭:৫৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলগুলোতে নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর চিন্তা চলছে। নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমান।
প্রায় তিন দশক পর আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু ও হল সংসদগুলোর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পান মাহফুজুর রহমান। তফসিল ঘোষণার পরদিন মঙ্গলবার সার্বিক আয়োজন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।
ছাত্রলীগ নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বাদে ছাত্রদল ও বাম ছাত্র সংগঠনগুলো হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছে। হলে কেন্দ্র হলে ভোটের আগের রাতে ব্যালটবাক্স ভর্তি করার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিএনপির বিভিন্ন নেতা। এমন প্রেক্ষাপটে হলে ভোটকেন্দ্র হলেও ব্যালট পেপার সকালে পাঠানোর একটি প্রস্তাব আসে নির্বাচন পরিচালনাকারীদের কাছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মাহফুজ বলেন, “এই প্রস্তাবটা আমরা গ্রহণ করলাম। আমরা বিষয়টা নির্দিষ্ট করার জন্যই তো আলোচনাগুলো করেছি সবার সাথে।”
হলে ছাত্রলীগের ‘দখলদারিত্ব’ থাকায় অন্য সংগঠনগুলোর বাধাহীন প্রচার চালানো কিংবা শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার পরিবেশ নেই বলে ছাত্রদল ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা দাবি করে আসছেন।
এই বিষয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা শিক্ষার্থী তারা নির্বিঘ্নেই হলে যাওয়া-আসা করছে, যাদের হলের অফিসে কাজ থাকে, তারা সেখানে যাচ্ছে। আমাদের কাজ হচ্ছে সকল ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে ধরনের পরিবেশটা তৈরি করা।”
একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচন পরিচালনার জন্য আমাদেরকে একটা গঠনতন্ত্র দেওয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুসারেই নির্বাচন হবে। গঠনতন্ত্র সিন্ডিকেট পাস করেছে। সেখানে ভোটকেন্দ্র হলেই রাখা হয়েছে। আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার কাজটুকু শুধু করব। রেওয়াজ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই নির্বাচন পরিচালনা ও নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখভাল করবে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় একটা সংবেদনশীল জায়গা। এটা পুলিশ কর্তৃপক্ষ যেমন জানে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও জানে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া তো পুলিশ হলে প্রবেশ করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয় যদি মনে করে যে পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন আছে তবে তারা সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তবে কর্তৃত্বমূলক ভূমিকায় তারা যেতে পারবে না।”
তফসিলে প্রচারের জন্য কম সময় রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অভিযোগের বিষয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, তফসিলের ঘোষণার দিন সোমবার থেকেই প্রচারের সুযোগ থাকছে। আন-অফিশিয়ালি তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই তো প্রচার প্রচারণা চলছে এবং শিডিউল ঘোষণার পর তো আরও জোরেশোরেই চলবে। যে তারিখে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে নির্বাচনের জন্য কর্মকাণ্ড সেদিন থেকেই শুরু করা যাবে। আমরা আচরণবিধিতে বলেছি, প্রচার-প্রচারণা নির্বাচনের একদিন আগে শেষ হবে। কিন্তু শুরুটা কখন হবে আমরা সেটা বলিনি। ফলে আমি মনে করি, এই সময়টা যথেষ্ট।
ক্লাসরুমে প্রচার চালাতে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবির বিষয়ে অধ্যাপক মাহফুজ বলেন, আচরণবিধি তৈরির সময় অনুষদের ডিনরা এবং বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানরা এ বিষয়ে নিজেদের আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ক্যাম্পেইন তো হবে হল পর্যায়ে। কেউ চাইলে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বাইরেও সভা-সমাবেশ করতে পারবে।
এদিকে ভোটকেন্দ্র হল থেকে একাডেমিক ভবনে আনার দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে গণস্বাক্ষর অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোটভুক্ত সংগঠন ছাত্র ফেডারেশন। এ নিয়ে তারা কমিশনে ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আরও আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন।