পানির ন্যায্য হিস্যা দাও, নইলে ভারত ফিরে যাও— শিবির
‘পানির ন্যায্য হিস্যা দাও, নইলে ভারত ফিরে যাও’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ ‘পানির ন্যায্য হিস্যা চাই’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত ছিল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কর্তৃক আয়োজিত ৫৪তম স্বাধীনতা দিবসের বিজয় র্যালি ও সমাবেশ। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম (উত্তর গেট) থেকে র্যালি শুরু হয়ে শাহাবাগ এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর, ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিণসহ বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা। সমাবেশে নেতারা বলেন, ‘গত ১৫ বছরে শিবিরকে প্রকাশ্যে কোনো কার্যক্রম পরচিালনা করতে দেয়নি ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ। তাদের কুকর্মের কারনে বাংলাদেশের ছাত্রজনতা তাদের দেশ থেকে তাড়িয়েছে।’ ভারতকে হুশিয়ারি দিয়ে নেতারা বলেন, ‘ফেলানির লাশ কোনো স্বাধীনতার প্রতীক নয়। আপনারা যদি যোগ্য প্রতিবেশি না হতে পারেন, তাহলে এদেশের ছাত্র জনতা আরও সাতটি ভারতের জন্ম দেবে।’
সমাবেশে শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু সাদিক কায়েম বলেন, ব্রিটিশদের থেকে আমরা স্বাধীনতা লাভ করলেও সেটা পূর্ণাঙ্গ ছিল না। ফলে ৭১ সালে আমাদের লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আবারো স্বাধীনতা লাভ করি। যে স্বাধীনতার লক্ষ ছিল স্বাধীন ভূমি। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সেটিও ভূলুন্ঠিত করেছে। গত ৫ আগস্ট আবারও ছাত্র জনতার আন্দোলনে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। অন্তুর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, তারা যেন ছাত্র জনতার আন্দোলনের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে যেন কাজ করেন।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আমরা চেয়েছিলাম বিশ্বের মানচিত্রে মাথা উচু করে দাড়াতে। আমরা এখনো সেটা পারিনি। আমাদের অর্জনের মধ্যে রয়েছে, লুটপাট, নৈরাজ্য। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ তারই সচিত্র উদাহরণ। ভারতীয় আগ্রাসন এবং তাদের দোসররা আমাদের কালচারাল অঙ্গন থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্র ভেঙে চুরমার করেছে। পিলখানা হত্যার মাধ্যমে আমাদের সামরিক খাতকেও নষ্ট করেছে ফ্যাসিবাদ । আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই। ফ্যাসীবাদ কিংবা বাকশাল সবখানে আমাদের মৌলিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। তারা গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। তারা শিক্ষাঙ্গনকে ধ্বংস করে তাদের এজেন্ডা বাস্তব্য়নের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘২৪ এ যারা হত্যাকাণ্ড চালিরেয়ছে, আমরা সরকারের কাছে তাদের সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানাই। চার মাস অতিবাহিত হলেও আমরা এখনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমরা সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ চাই। যেখানে সকল নাগরিক তার অধিকার ফিরে পাবে। ৫৪ বছর পরে আমরা সেই স্বপ্ন দেখতে চাই। যেখানে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ নিয়ে পথ চলতে পারব।
এর আগে গতকাল রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শিবিরের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, র্যালি ও আলোচনা সভা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল, রচনা, কুইজ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, ইয়াতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে খাবার গ্রহণ, মেধাবী ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার প্রদান, মেডিকেল ক্যাম্প ও ব্লাড ডোনেশন প্রোগ্রাম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা পাঠের আসর ও দেয়ালিকা প্রকাশ, শহীদি গান ও ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রচার এবং জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়া প্রভৃতি প্ল্যাটফর্মে বিজয় দিবস সম্পর্কিত লেখালেখি করা।