দ্রুত ডাকসু নির্বাচন ও ছাত্রীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিতসহ একগুচ্ছ দাবি ছাত্রশিবিরের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক সংলাপ বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
সংলাপে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, সংলাপে ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে একজন করে প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী করণীয় নিয়ে তাদের মতামত এবং আগামীতে ক্যাম্পাস পরিচালনায় বিষয় নিয়ে নানা আলোচনা করা হয়।
সংলাপে অংশ নিয়ে ছাত্রশিবির দ্রুত ডাকসু নির্বাচন আয়োজন ও ছাত্রীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিতসহ একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে। শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাবি প্রশাসনের কাছে যেসব দাবি ছাত্রশিবির জানিয়েছে তারমধ্যে রয়েছে-
১) সকল ছাত্র সংগঠনগুলাে ছাত্ররাজনীতির যে সংস্কার প্রস্তাবের কথা বলছে তার ভিত্তিতে একটি ঐক্যমতে পৌঁছে আগামীতে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি কিভাবে চলবে তা নির্ধারণ করা;
২) ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে কাজগুলো হওয়া দরকার এবং স্মৃতিচারণ করা দরকার তা হচ্ছে না। যেহেতু এই গণঅভ্যুত্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে শুরু হয়েছে। তাই অভ্যুত্থানের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে একটি সংগ্রহশালা বানানো, গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা; ঢাবির সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের মাধ্যমে জার্নাল ও ডকুমেন্টেশন পাবলিশ করা, আন্দোলনে যারা আহত-নিহত হয়েছে তাদের সম্মাননা দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা;
৩) নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্য ক্যাম্পাসে যানজট ও বহিরাগত মুক্ত করা;
৪) ঢাবিতে মেয়েদের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কিন্তু আবাসিক হল আছে মাত্র ৫টি। দুইটি হল তৈরির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পাশাপশি যেন ছাত্রীরা শতভাগ আবাসনের আওতায় আসে সেই লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেয়া। আর এখন যারা হলে সিট পায়নি তাদের যেন প্রতি মাসে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়। বিশেষ করে যারা ১ম ও ২য় বর্ষে পড়ে তাদের জন্য এ ব্যবস্থা করা ।
৫) আবাসিক হলের খাবারের মান বৃদ্ধির জন্য ভর্তুকি বাড়ানো;
৬) বর্তমানে যে সিন্ডিকেট রয়েছে তা ভেঙে দিয়ে নতুন করে যারা চব্বিশের আন্দোলন-আদর্শকে লালন করেন সেসব শিক্ষকদের সমন্বয়ে নতুন সিন্ডিকেট গঠন করা;
৭) যেসব শিক্ষক গত ১৬ বছরে শিক্ষার্থী নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং জুলাই আন্দোলনে বিরোধীতা করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। প্রতিটি বিভাগ থেকে যেন তাদের অপসারণ করা হয়;
৮) গত জুলাই আগষ্টের আন্দোলনের হামলায় যেসব ছাত্রলীগ নেতারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। এ বিষয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের অগ্রগতি প্রদর্শন করা। তাদের যেন দ্রুত গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া;
৯) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নামফলকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও আইকনদের নাম পরিবর্তন করে চব্বিশের শহীদের নামে সেগুলো করা;
১০) বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব জমি দখল হয়েছে সেগুলো উদ্ধার করার জন্য একটা কমিটি গঠন করা;
১১) বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিগত বছরে দলীয় ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে আমরা দেখেছি। আগামীতে নিয়োগ যেন স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দেয়া হয় সেটা নিশ্চিত করা;
১২) ছাত্র সংসদ বা ডাকসু নির্বাচন দ্রুত দিতে রোডম্যাপ ঘোষণা করা।