০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:১৭

আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, এখনও আছেন— ছাত্রলীগের সঙ্গে সর্ম্পক নেই দাবি

  © টিডিসি ফটো

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত ‘ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অংশ নিলেন ছাত্রলীগের দুই নেতা!’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী- ফোরকান আহমদ মহিউদ্দিন ও ইসরাত জাহান সুমনা। আজ শুক্রবার (৮ নভেম্বর) পৃথকভাবে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তারা সক্রিয় ছিলেন এবং এখনও আছেন। এছাড়া ছাত্রলীগের সঙ্গে বর্তমানে তাদের কোনো সর্ম্পক নেই| 

প্রতিবাদলিপিতে মহিউদ্দিন বলেন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে ছাত্রলীগ নেতা ট্যাগ দিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হয়, যা অত্যন্ত অসম্মানজনক এবং বিব্রতকর। সম্প্রতি সংঘটিত আন্দোলনে আমি (একেবারে শুরু থেকেই) ৫ই জুন শুরু হওয়া কোটা আন্দোলন, পরবর্তীতে ৯ দফা এবং ১ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ও সমন্বয় করেছি। ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান ও কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়কের ভুমিকায় থাকায় ছাত্রলীগের হুমকি, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে পুরো সময় জুড়েই। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমার সক্রিয় কার্যক্রমকে বিবেচনার বাইরে রেখে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের করা উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

অপর এক প্রতিবাদলিপিতে ইসরাত জাহান সুমনা বলেন, প্রথম বর্ষে পলিটিক্যালি হলে উঠার দরুন ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সাথে যুক্ত কখনোই ছিলাম না। প্রথম বর্ষের শেষের দিকে লিগ্যালি হলের রুম পেয়ে পলিটিক্যাল ফ্লোর ছেড়ে চলে আসি। এরপর ২০২২ সালে যখন নতুন কমিটি দেয় তখন সিভি জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। বলতে গেলে যারা পলিটিক্যালি হলে উঠেছিল সবাইকেই সিভি জমা দিতে বলা হয়। লিগ্যাল রুমে চলে আসার পরও পোস্ট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রোগ্রামে যাইনি আর। আমাদেরকে যে পোস্ট দেওয়া হয়েছিল আদতে এটার কোনো কার্যকারিতাই ছিল না। 

তিনি আরও বলেন, কোটা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলাম শুরু থেকেই। ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছিলাম। এরপর আমি পদত্যাগ করেছি এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ১৬ জুলাই হল থেকে ছাত্রলীগ তাড়িয়েছি আমরাই। হলকে রাজনীতি মুক্ত করার জন্য আমরাই এগিয়ে এসেছিলাম। আবার, কোটা আন্দোলনের পর প্রত্যেকটা যৌক্তিক আন্দোলনে ছিলাম, এখনো আছি। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজুতে দাঁড়িয়েছি। এখন হল এবং একাডেমিক এরিয়ায় দলীয় এবং লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আবার একত্রিত হয়েছি। হলে দলীয় রাজনীতি কতটা জঘন্য, নির্মম আর গেস্টরুম কালচারের যে নমুনা তার কোনো কিছুই কারও অজানা নয়৷ 

“এখন গতকাল রাতে হল এবং একাডেমিক এরিয়ায় দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে রাজুতে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্রলীগ ট্যাগ খেতে হলো। একদল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, সেই সাথে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে সংবাদ পরিবেশ করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”

প্রতিবেদকের বক্তব্য
২০২২ সালের ২২ নভেম্বর ঢাবির শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের খদিজা আখতার উর্মি ও নুসরাত রুবাইয়াত নীলা কমিটির উপ-পাঠাগার সম্পাদক ছিলেন ইসরাত জাহান সুমনা। সংগঠন থেকে তার পদত্যাগের অফিশিয়াল কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সুমনার সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে তোলা ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রীর ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে।

অন্যদিকে ফোরকান আহমদ মহিউদ্দিন রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। পরে ঢাবিতে এসেও ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে| তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আন্দোলন চলাকালে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা গেছে|