ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানোর দাবিতে ভিসির কাছে শিবিরের স্মারকলিপি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানোর দাবিতে ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রশিবির। আজ বুধবার দুপুরে ভিসি কার্যালয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের নেতৃত্বে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রেজিস্ট্রার কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে আবেদন ফি ধরা হয়েছে এক হাজার ৫০ টাকা এবং আইবিএ ইউনিটের আবেদন ফি এক হাজার ৫০০ টাকা। যে আবেদন ফি শিক্ষার্থীদের জন্য সংকুলান খুবই কষ্টসাধ্য।
“২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ছিল ৩৫০ টাকা। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৪৫০ টাকা। এরপর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬৫০ টাকা। পরে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ফি আরও ৩৫০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়। পরের বার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আবেদন ফি ছিল ১ হাজার টাকা। এরপর ২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আবেদন ফি আরও ৫০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৫০ টাকা করা হয়েছে।”
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ৫ বছরের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন ফি বাড়ছে তিনগুণ। অর্থাৎ, ৭০০ টাকা বেড়েছে। পত্রিকার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, শুধু এক শিক্ষাবর্ষের (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা থেকেই ১৭ কোটি টাকা ‘লাভ’ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্রমান্বয়ে প্রতি শিক্ষাবর্ষেই আবেদন ফি বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রতি অতিরিক্ত আবেদন ফি এর বোঝা চাপানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য।
উপাচার্য, আপনি নিশ্চয়ই জানেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার দরিদ্র-মধ্যবিত্ত। এর মধ্যে ১০ শতাংশের অধিক শিক্ষার্থীর পরিবার হতদরিদ্র। এসব শিক্ষার্থীর পরিবারের মাসিক আয় ৪ হাজার টাকার কম। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক অবস্থা এই পরিসংখ্যান থেকে সহজেই অনুমান করা যায়। প্রতি শিক্ষাবর্ষেই আমরা পত্রিকায় দেখি শিক্ষার্থীরা ধারদেনা করে, বাড়ির গবাদিপশু, জমি ইত্যাদি বিক্রি করার মাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি ও ভর্তি ফি'র ব্যয় সংকুলান করে থাকেন।”
স্মারকলিপিতে বলা হয়, এমতাবস্থায় অতিরিক্ত আবেদন ফি নির্ধারণ করা শিক্ষার্থীদের উপর এক ধরনের জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া জুলুম বলে মনে করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের নিকট দাবি জানাচ্ছি যে, অনতিবিলম্বে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমিয়ে শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।