ছাত্রলীগ না করার কারণেই হল ছাড়তে হয়েছিল রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিকে

মাসুদ কিবরিয়া
মাসুদ কিবরিয়া  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মাসুদ কিবরিয়ার সঙ্গে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জানান, হলের সিট পেতে ছাত্রলীগের সহায়তা নিয়েছিলেন, তবে ছাত্রলীগের দলীয় কর্মসূচিতে যেতেন না। ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় হল থেকে ছাত্রলীগ বেরও করে দেন তাকে। 

অন্যদিকে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেছেন, পাঁচ বছর আগে তার ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকার ঘটনাটি একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা।

ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, আমাদের কাছে তার প্রথম বর্ষে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ার তথ্য আছে। কিন্তু সেটি ছিল শুধুই হলে সিট পাওয়ার জন্যে। এরপর তিনি ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রমে অংশ নেননি বিধায় তাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছিলো। প্রায় দুই আড়াই বছর যাবত মাসুদ কিবরিয়া ছাত্র ইউনিয়নের সাথে জড়িত এবং তিনি জুলাই বিপ্লবেও অংশ নিয়েছেন সক্রিয়ভাবে।

এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে নতুন সভাপতি মাসুদ কিবরিয়া বলেন, হ্যাঁ আমি মানছি, হলে সিট পাওয়ার জন্য আমি ছাত্রলীগের সাহায্য নিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রমে আমি যেতাম না বিধায় আমাকে তারা হল থেকে বের করে দেয়। এছাড়াও আমি ছাত্রলীগের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলাম না।

সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে যেখানে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের কার্যক্রম থেকে শুরু করে কোনো অভিমত জানাতে পারেনি, সেখানে আমি চাই সকলেই তাদের মতামত প্রকাশে স্বাধীন হোক। এছাড়া আমাদের বাম মতাদর্শ বা বাম ঘরানার রাজনীতি নিয়ে যারা আগ্রহী তাদের জন্য ছাত্র ইউনিয়নের দরজা সবসময়ই খোলা। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করতে চাই।

এ ঘটনায় এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে রাবি ছাত্র ইউনিয়নে দপ্তর সম্পাদক মুন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কতিপয় গণমাধ্যম ছাত্র ইউনিয়ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মাসুদ কিবরিয়াকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত করে সংবাদ প্রকাশ করে যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মাসুদ কিবরিয়া কখনই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেননি। বরং ছাত্রলীগ না করার কারণে ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি ছাত্রলীগ কর্তৃক তাকে মতিহার হল থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়।

'চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাসুদ কিবরিয়া ছিলেন অন্যতম সংগঠক যা রাবি ক্যাম্পাসে সমাদৃত। স্বৈরাচারবিরোধী সেই আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় ছাত্রলীগ কর্তৃক তাকে নানাবিধ হেনস্তার শিকার হতে হয়, এমনকি তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।'

তাতে আরো বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বিরোধিতা হতে হয় যুক্তিসংগত, রাজনৈতিক আদর্শিক কারণ সম্বলিত। কিন্তু সেটি যখন কোনো জুজুর কথা উল্লেখ করে শুধুমাত্র বিতর্কিত করে তোলার জন্যই মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয় তা আরেকটা অপরাজনীতির-ই নামান্তর। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় জোরপূর্বক ছাত্রলীগের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার পাঁচ বছর পর তাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে ছাত্রলীগের কর্মী বানিয়ে দেওয়া নিতান্তই কুরাজনীতি।

ছাত্র ইউনিয়ন কোনো অর্থ-কড়ি লাভের সংগঠন নয়, পাওয়ার প্র্যাক্টিসের সংগঠন নয়। এখানে আদর্শিক লড়াইয়ের পথে হাঁটার দায় বর্তায় মাত্র। সেই আদর্শিক লড়াইটা সাচ্চা কিনা সেটা খতিয়ে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, গতকাল (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সংসদের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এতে মাসুদ কিবরিয়াকে সভাপতি ও পরমা মোস্তফাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। তবে মাসুদ কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence