১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:৫৫

ছাত্র আন্দোলনে নিহত রায়হান পেলেন জিপিএ ৫, অঝোরে কাঁদছেন মা

আবু রায়হান  © সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত আবু রায়হান এইচএসসি (আলীম) পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন। ছেলের এমন ফলাফলে অঝোরে কাঁদছেন মা। মায়ের ইচ্ছে ছিল ছেলে আবু রায়হান ডাক্তার হয়ে গরিব-দুঃখী মানুষের সেবা করবে। 

জানা গেছে, তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট আবু রায়হান। তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বাবা ফজলে আলম ও রেহেনা বেগম একমাত্র ছেলে আবু রায়হানকে নিয়ে সুখেই দিন পার করছিলেন।

গত মঙ্গলবার এইচএসসি (আলীম) পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। আবু রায়হান জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি সদর উপজেলার রহিমানপুর আলীম মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনার আন্দোলনে যান আবু রায়হান। সে দিন পুলিশের ছররা গুলিতে আহত হন তিনি। ৫ আগস্ট বিকেলে পৌর শহরের ছিট চিলারং এলাকায় সাবেক কমিশনার একরামুদৌলার বাড়িতে সঙ্গীদের সঙ্গে মীমাংসার জন্য যান আবু রায়হান। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন দেওয়া হলে তা বিস্ফোরিত হয়ে ঝলসে গুরুতর আহত হয় আবু রায়হানসহ ৪ জন। রংপুর থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে আবু রায়হান মারা যান। ওই দুর্ঘটনায় আহত চার জনই একে একে মারা যান। পরে আবু রায়হানের বাবা ফজলে আলম বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও-১ ও ২ আসনের সাবেক এমপিসহ ৯১ জনের নামে আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় সাবেক এমপি রমেশ চন্দ্র সেন, সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজন ও সুজনের বাবা সাত বারের সাবেক এমপি দবিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।

রায়হানের প্রতিবেশী জসিমউদ্দীন বলেন, আবু রায়হান অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র ছেলে ছিল। তার মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। পরিবারটির প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

আবু রায়হানের আরেক প্রতিবেশী জুই আক্তার বলেন, তিনি খুব ভালো ছেলে ছিলেন। জিপিএ ৫ পেয়েছে আমরা অনেক খুশি। কিন্তু এই খুশির কোনো মূল্য নেই।

নিহত আবু রায়হানের মা রেহেনা বেগম বলেন, ইচ্ছে ছিল ছেলে ডাক্তার হয়ে এলাকার মানুষের সেবা করবে। শেষ বয়সে আমাদের দেখভাল করবে। কিন্তু তা আর পূরণ হলো না। আমার ছেলে কত আদরের ছিল সেটা বলে বুঝাতে পারব না। আমি চাই এই দেশটা সুন্দরভাবে চলুক। আর আমার মত কোনো মায়ের কোল খালি না হোক সেটাই আমার চাওয়া।

আবু রায়হানের বাবা ফজলে আলম বলেন, এ ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচারের দাবি পকরছি। এ জন্য আদালতে মামলা করেছি। আমার ছেলে আবু রায়হানের জন্য দোয়া করবেন সে যেন জান্নাতবাসী হয়।