নিজ সংগঠনের নেতাদের মারধরের শিকার সিদ্ধেশ্বরী কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. রফিকুল আমান। কলেজের ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর অপকর্মের প্রতিবাদ করে তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
এর আগে কেন্দ্রীয় সংসদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক মো. সোহেল আহমেদসহ অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান রফিকুল আমান। তবে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে শনিবার (১০ অক্টোবর) পর্যন্ত জানেন না বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনার সময়কার ভিডিও ফুটেজেও তাঁকে মারধর করতে দেখা গেছে।
রফিকুল আমান শনিবার সকালে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মো. সোহেল আহমেদ এবং কর্মী জামিল, ফয়সাল, শুভ ও সাদ আধিপত্য বিস্তারের জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে অনুপ্রবেশ করিয়েছে। তারা বহিরাগতদের কলেজে এনে পরিবেশ নষ্ট করছেন। মাদক বিক্রি, সেবন ও শিক্ষার্থীদের ওপর মারধরের মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। এটি বিএনপির নির্দেশের লংঘন।
ক্যাম্পাসের আশেপাশের মার্কেট ও দোকান থেকে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় তারা মেরে ফেলার হুমকি দেয় অভিযোগ করে আমান বলেন, গত ৩ অক্টোবর কলেজের ইন্টারমিডিয়েটে পড়া দু’জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সোহেল ও তাঁর সমর্থকরা নিজেদেরকে জড়িয়ে ফেলে। তারা দেশীয় অস্ত্র, চাইনিজ কুড়াল, দা, ছুরি নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে ছাত্রদলের সদস্য সচিব শেখ আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সম্রাট শিকদারের অনুসারী ও শিক্ষকদের চেষ্টায় তাকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।
কলেজের এমন পরিস্থিতি দেখে বিষয়টি জানাতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে গত ৬ অক্টোবর অধ্যক্ষের কক্ষে যান জানিয়ে রফিকুল আমান বলেন, এদিন সোহেল ও তাঁর সমর্থকরা তাদের অনুসরণ করেন। পরে শিক্ষক প্রতিনিধির সহযোগিতায় কলেজ থেকে বের করে তারা ৩০-৪০ জন মারধর শুরু করে।
একপর্যায়ে মগবাজারের পরিত্যক্ত ভবনের কাছে নিয়ে হাতুড়ি, রড, ইটের টুকরো ও লাঠি দিয়ে পায়ে আঘাত করতে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বলতে থাকে, ‘ওপরের নির্দেশ আছে। প্রথমে তোর পাঁ ভাঙতে হবে। পরে মেরে লাশ গুম করে দিতে হবে।’ পরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ছেলে এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি হামলাকারীদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন: রিকশায় ঝুলে থাকা মরদেহের পেছনের যে বীভৎস বর্ণনা দিলেন চালক
এ বিষয়ে সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক মো. সোহেল আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল-আমিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সংগঠনে মতের অমিল বা প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। তবে এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। কেন্দ্রীয় কমিটি বিষয়টি দেখছে। তাদের আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। যারা এ ঘটনায় দোষী, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব শনিবার (১২ অক্টোবর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সহ-সভাপতিকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।