৪ মামলা মাথায় নিয়েও ঢাবি শিবির নেতার অনার্সে সিজিপিএ ৩.৬৮, মাস্টার্সে ৩.৭৬

ঢাবির বায়তুল মাল সম্পাদক আলাউদ্দিন আবিদ
ঢাবির বায়তুল মাল সম্পাদক আলাউদ্দিন আবিদ  © সংগৃহীত

৪ মামলা মাথায় নিয়েও অনার্স ও মাস্টার্সে অসাধরণ ফল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের কমিটির বায়তুল মাল (অর্থ) সম্পাদক আলাউদ্দিন আবিদ। ঢাবির ২০১৫-১৬ সেশনের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার বিভাগের এ শিক্ষার্থী অনার্সে সিজিপিএ ৩.৬৮, মাস্টার্সে ৩.৭৬ অর্জন করেছেন।

আজ বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে।  এতে সভাপতি হিসেবে রয়েছে সাদিক কায়েম ও সেক্রেটারি হিসেবে রয়েছে এস এম ফরহাদ।

কমিটিতে থাকা বায়তুল মাল (অর্থ) সম্পাদক আলাউদ্দিন আবিদ ঢাবির ২০১৫-১৬ সেশনের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে। দাখিল ও আলিম শেষ করেছিলেন সেখানকার একটি মাদ্রাসা থেকে।

তখন থেকে তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় জেলে যেতে হয়েছিল ৪ বার আর জেলে ছিলেন প্রায় ১৯ মাস। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসেও একটি মামলায় ওয়ারেন্ট জারি হওয়াতে যেতে হয়েছিল জেলে। এজন্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক লাইফ থেকে এক বছর ইয়ার ড্রপও দিতে হয়েছিল। মামলার বোঝা ও ইয়ার ড্রপ মাথায় নিয়েও ঢাবিতে তার একাডেমিক ফল ছিল ঈর্ষণীয়। তার অনার্সের ফল ছিল সিজিপিএ ৩.৬৮ আর মাস্টার্সে ফল ৩.৭৬।

২০১৩ সালে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে মিছিল থেকে গ্রেফতার হয়ে জেলে গিয়েছিলেন আলাউদ্দিন আবিদ। এরপরে ২০১৫ সালে কারাগার থেকে বের হয়ে দিয়েছিলেন আলিম পরীক্ষা। এ বিষয়ে আলাউদ্দিন আবিদ বলেন, আমার মামলা ছিল মোট ৪টি। তবে বর্তমানে দুটি মামলা চলমান, বাকিগুলো থেকে খালাস পেয়েছি।

তিনি জানান, তার এলাকাটি আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত হওয়াতে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর একবার মাদ্রাসার হোস্টেল ঘেরাও করে তাকে আটক করে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছিল। এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে গেলে মাথায় পানি দিয়ে জ্ঞান ফেরানো হয়েছিল। তখন আওয়ামী লীগের লোকেরা আমাকে বলেছিল এভাবে মামলা দিতে হতে যাতে সে আর জেল থেকে বের হতে না পারে। পরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছিল।

এরপর টানা অনেক দিন জেলে ছিলেন আলাউদ্দিন আবিদ। পরবর্তীতে কারাগার থেকে বের হয়ে দেন আলিম পরীক্ষা। পরে বের হয়ে ফেনী এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে একটি কোচিং করে ঢাবিতে ভর্তি সুযোগ পান তিনি। 

আলাউদ্দিন আবিদ জানান, ঢাবির ২০১৫-১৬ সেশনের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভর্তি হলেও প্রথম বর্ষে ওয়ারেন্ট থাকায় জেলে যেতে হয়েছিল তাকে। পরে সহপাঠীদের সঙ্গে আর একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন তিনি। এরপর ২০১৬-১৭ সেশনের সঙ্গে তিনি একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যান।

শাখা ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর আলাউদ্দিন আবিদের বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। ফারুক আহসান নামে একজন লিখেছেন, সবাই যখন শিবিরের সিজিপিএ নিয়ে কথা বলছিল তখন আমি চিন্তা করছিলাম আবিদ আসলে থাকতে পারবে কি না। কারণ তার রিএডমিশন (পুনঃভর্তি) আছে জেল খাটার কারণে আর সিজিপিএর অবস্থাও এরকমই। আজকে দেখলাম সে কমিটিতে আছে। অভিনন্দন আবিদ।


সর্বশেষ সংবাদ